পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭ তৃতীয় পরিচ্ছেদ দিন নহে, প্ৰত্যহ একাকিনী আগমন করেন ! কি ভয়ানক কথা ! ইহা প্ৰকৃতই অবৈধ ও দুঃসাহসের কাৰ্য্য । অন্তঃপুর বাসিনী কোমলহৃদয়া কুলাঙ্গনার সোঁম্য স্বভাবে একাৰ্য্য কখনই শোভা পায় না। । মনসুর চিন্তাকুলচিত্তে ইহাই ভাবিতেছেন । তাহার ভগিনী কিন্তু স্বীয় কাৰ্য্য সাধনে বিব্ৰত । তিনি বৃক্ষশ্ৰেণী সমাকীৰ্ণ এক সঙ্কীৰ্ণ পথ দিয়া অরণ্যের অভ্যন্তর-ভাগে প্ৰবেশ করিলেন এবং একটী বৃক্ষতলে লতাপল্লব-রচিত আসনে উপবিষ্ট হইয়া একাগ্ৰচিত্তে গভীর তপস্যায় নিমগ্ন হইলেন । স্থানটী অতি মনোরম ৷ চতুৰ্দিকে ঘন সন্নিবেশিত তরগুলা রাজি প্ৰাকৃতিক প্রাচীরপে বিরাজমান, মধ্যস্থলে একটী বৃহৎ বিটপী ঘনপল্লববিশিষ্ট শাখা-প্ৰশাখা বিস্তার করিয়া দণ্ডায়মান । বৃক্ষের নিমভাগ সমতল—সুন্দর—পরিস্কৃত—পরিচচ্ছন্ন ! যেন মূৰ্ত্তিমতী পবিত্ৰতা ও স্বৰ্গীয় মাধুৰ্য্যে স্থানটিী পরিব্যাপ্ত হইয়৷ রহিয়াছে। ফলতঃ ইহা সাধনার উপযুক্ত আশ্ৰম বটে । এখানে আসিয়া মনসুরের ভক্তিনদী স্বতঃই উচ্ছলিত হইয়া উঠিল । তিনি কৃতজ্ঞহৃদয়ে মহিমময় মহীশ্বরের উদ্দেশে মস্তক নত করিয়া প্ৰেমাশ্ৰম বৰ্ষণ করিলেন । যে সন্দেহবশে তিনি ভগিনীর অনুসরণ করিয়াছিলেন, এক্ষণে তাহা তিরোহিত হইল,—শ্ৰদ্ধা পুতচিত্তে তখন ধৰ্ম্মশীলা ভগিনীকে শত শত ধন্যবাদ প্ৰদান করিলেন এবং তঁাহার শেষ কাৰ্য্যকলাপ দৰ্শনেচ্ছায় কিঞ্চিৎ দূরে লতাগুলোর অন্তরালে প্রচ্ছন্নভাবে উপবেশন করিয়া রহিলেন ।