পাতা:মহর্ষি মনসুর - মোজাম্মেল হক.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহৰ্ষি মনসুর অবধারণ করিয়াছিলেন, সহস্ৰ পীড়ন সহিলেন, প্ৰাণ বিসৰ্জন দিলেন, তথাপি তাহা হইতে বিচু্যত হইলেন না । তাহার ভগিনী এই কথা শুনিয়া ঈষৎ হাস্যের সহিত সদুঃখে বলিয়া ছিলেন, “তোমরা িনতান্ত ভ্ৰান্ত ! প্রকৃতই আমার ভ্ৰাতা যদি পুরুষ হইত, যদি তাহার কিঞ্চিৎ দৃঢ়তা ও পৌরুষ থাকিত, তাহা হইলে পাত্ৰ লেহন করিয়া কখনই উন্মত্ত হইত না—পূৰ্ণ পাত্ৰ পানেও তাহার অন্তর অবিচলিত—স্থির—শান্ত থাকিত । আমি তাহাকে পুরুষ বলিয়া গণ্য করিতে পারি না ।” রমণী ইহা বলিয়া অতঃপর উত্তেজনার বশে বলিয়া ফেলিলেন, “আজি বিংশতি বৰ্ষ হইতে চলিল, আমি প্ৰত্যেক রজনীতে এই দৈব প্ৰেমামৃত পূৰ্ণ মাত্ৰায় পান করিয়া আসিতেছি, কিন্তু কৈ, কখন মুহূৰ্ত্তের জন্যও তো বিচলিত হই নাই ! আমার রসনা অবাধ্য হইয়া কখন তো অন্যায়াচারণ করে নাই ! ! বরং অামি নিয়ত নম্ৰতার সহিত প্ৰাৰ্থনা করিয়াছি, “হে দয়াময় প্ৰভো ! এতদপেক্ষা অধিকতর উন্নতিমাৰ্গে আমাকে তাকৰ্ষণ করুন ।” প্রিয় পাঠক ! দেখুন কি তেজস্থিতা ! কি অপূৰ্ব্ব নারী হৃদয়ের বল ! কি অলৌকিক সাধন-সহিষ্ণুতা ! বলুন দেখি ইনি কি মানবী ?—না দেবী ? কে না বলিবে, ইনি মানবী অাকারে মৰ্ত্ত্যধামে বরণীয়া দেবী ছিলেন । ফলতঃ তত্ত্বদেশী প্ৰেমোন্মত্ত মনসুর অপেক্ষাও যে এই নরকুল-গৌরব শুদ্ধমতী রমণীর তপশ্চারণ অতি নিৰ্ম্মল ও উচ্চতর ভিত্তির উপরে প্ৰতিষ্ঠিত ছিল, তাহাতে আর সন্দেহের লেশমাত্ৰ নাই ।