পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
কারাকাহিনী।

ভুট্টার আটা খায়। শুধু ভুট্টার আটা ও “বীন্” খাওয়ার অভ্যাস ত আমাদের মোটেই ছিল না, তাও আবার তরকারি না দিয়া। তাহা ছাড়া যে ভাবে তাহারা খাবার তৈরী করিত, তাহাও ভারতবাসীর পছন্দ হইত না। তাহারা ত তরকারি ধুইত না, আর কোন মশলাও দিত না। এমন কি, শ্বেতাঙ্গদের যে তরকারি তৈয়ারি হইত, তাহারই খোলা দিয়া কাফ্রিদের তরকারি হইত। লবণ ছাড়া তাহাতে আর কিছু দেওয়া হইত না, চিনির কথা ত ছাড়িয়াই দিন।

 সুতরাং খাওয়ার ব্যাপারটা সকলকেই কষ্ট দিতে লাগিল, কিন্তু আমরা স্থির করিয়াছিলাম যে আমরা, সত্যাগ্রহীরা, জেলের অধ্যক্ষদের কাছে কোন মতেই হাত জোড় করিব না। তাই এ বিষয়ে আমরা কোন প্রকার অনুগ্রহ ভিক্ষা করিলাম না। পূর্বোক্ত খাদ্যেই সন্তুষ্ট রহিলাম।

 গভর্ণর আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে উত্তরে বলিলাম, “খাদ্য ভাল নয়, কিন্তু গভর্ণমেণ্টের কাছে আমরা কোন প্রকার সুবিধা বা কৃপা ভিক্ষা করি না। সরকার যদি খাদ্যের ব্যবস্থা ভাল করেন ত ভাল কথা, না হইলে এই নিয়ম অনুযায়ী যাহা জুটিবে তাহাই আমরা খাইব”।

 কিন্তু এই মনোভাব বেশী দিন টিকিল না। যখন অন্যান্য সকলে আসিলেন তখন আমরা মনে করিলাম, খাওয়া দাওয়ার যে কষ্ট, আমাদের সঙ্গী হইয়া ইঁহারা সেই কষ্ট সহ্য করিবেন, তাহা ভাল নয়। জেলে যে আসিতে হইয়াছে ইহাই তাঁহাদের পক্ষে যথেষ্ট। ইঁহাদের জন্য সরকারের নিকট স্বতন্ত্র ব্যবস্থা চাওয়াই উচিত। এই বিবেচনায় গভর্ণরের সহিত এ বিষয়ে কথাবার্তা চালাইলাম। তাঁহাকে বলিলাম, আমাদের যেমন তেমন খাবার হইলেই চলে, কিন্তু যাঁহারা পরে আসিয়াছেন তাঁহারা এরূপ করিতে পারিবেন না। গভর্ণর বিবেচনা করিয়া উত্তর দিলেন যে, শুধু ধর্ম্ম রক্ষার জন্য যদি অন্যত্র রন্ধনের ব্যবস্থা করিতে চাহেন ত করিতে পারেন; কিন্তু