পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
কারাকাহিনী।

এই কারণে আমরা আবেদন করিতেছি যে ‘পূপূ’ বন্ধ করিয়া আমাদের জন্য য়ুরোপীয় রীতি অনুসারে খাদ্য দেওয়া হউক, অথবা এরূপ খাদ্য দেওয়া হউক যাহা আমাদের পক্ষে হানিকর নহে। আমাদের যে খাদ্য দেওয়া হইবে তাহা আমাদের প্রকৃতি ও রীতি নীতি অনুযায়ী হওয়াই উচিত।

 এই কাজটী বিশেষ প্রয়োজনীয়, সুতরাং শীঘ্রই ইহার বিধান হওয়া প্রয়োজন। অতএব আবেদনকারিগণ প্রার্থনা করেন যে ইহার উত্তর আমাদিগকে যেন টেলিগ্রামে পাঠান হয়।”

 এই আবেদনে আমরা ২১ জন নাম স্বাক্ষর করিয়াছিলাম। স্বাক্ষর করা হইলে আবেদন পত্র পাঠান হইতেছিল, এমন সময়ে আরও ৭৬ জন ভারতীয় কয়েদী আসিয়া পৌঁছিলেন, তাঁহারাও ‘পূপূ’ খাইতে নারাজ। তাই আবেদন পত্রের নিম্নে লেখা হইল, “আরও ৭৬ জন কয়েদী আসিয়াছেন। পূর্ব্বোক্ত খাদ্য গ্রহণে তাঁহারাও অনিচ্ছুক। অতএব শীঘ্রই ব্যবস্থা করা প্রার্থনীয়।” টেলিগ্রাম পাঠাইবার জন্য গভর্ণর সাহেবকে অনুরোধ করিলাম তখন তিনি টেলিফোন যোগে ডিরেক্টারের অনুমতি লইয়া ‘পূপূ’র পরিবর্ত্তে চার আউন্স রুটি দেওয়ার হুকুম দিলেন। ইহাতে সকলে খুব খুশী হইল। তখন ২২ শে তারিখ হইতে সকালে চার আউন্স রুটি ও সন্ধ্যায় ‘পূপূ’ দেওয়ার পরে রুটি দেওয়া হইতে লাগিল। সন্ধ্যায় আট আউন্স রুটি দেওয়ার কথা ছিল। অন্য কোন হুকুম আসা পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বজায় রহিল। এজন্য গভর্ণর একটি কমিটি নিযুক্ত করিয়াছিলেন। তাহাতে আটা, ঘি, চাউল ও দাল দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলিতেছিল। তাহারই মধ্যে আমাদের ছাড়িয়া দেওয়া হইল। সুতরাং ইহার পর আর কোন কথা উঠিল না।

 প্রথমে যখন আমরা আট জন মাত্র ছিলাম তখন আমরা কেহই রাঁধিতাম না। ভাত ভাল হইত না এবং তরকারি বরাদ্দের দিন তরকারি খুবই