পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
কারাকাহিনী।

ভারতবাসীকে ঐরূপ দুর্ব্বল মনে করিয়া ছুটী দেওয়া হইল। বাকী সকল কাজে আসিলেন। দ্বিপ্রহরে বারোটা হইতে একটা পর্য্যন্ত খাইবার সময়। একটা হইতে পাঁচটা পর্য্যন্ত কাজ করিতে হইত। দ্বিপ্রহরে আমাদের দেখিবার ভার শ্বেতাঙ্গের বদলে কাফ্রি দারোগার উপরে পড়িল। সে শ্বেতাঙ্গ দারোগার চেয়ে ভাল ছিল, বেশী তাগাদা করিত না, মাঝে মাঝে একটু আধটু বলিত। এই বেলা, অর্থাৎ দুপ্রহরে, কাফ্রি ও ভারতবাসীকে একই স্থানে ভিন্ন ভিন্ন অংশে রাখা হইল। আমাদিগকে একটু নরম জমি খুঁড়িতে দেওয়া হইল।

 যে লোকটি এই কাজের কণ্ট্রাক‍্ট্ অর্থাৎ ঠিকা লইয়াছিল, তাহার সহিত আমার কথা হয়। সে বলিল, ভারতীয় কয়েদীদের কাজে তাহায় ক্ষতি হইবার সম্ভাবনা। সে স্বীকার করিল যে, একজন কাফ্রি একযোগে যতখানি শারীরিক শ্রম করিতে পারে একজন ভারতবাসী তাহা পারে না।

 আমি বলিলাম, ভারতবাসীরা কোনও দারোগার ভয়ে কাজ করিবার লোক নহে। তাহারা ঈশ্বরের ভয়ে যতখানি পারিবে ততখানি কাজ করিৰে। কিন্তু পরে আমার এই মত পরিবর্ত্তন করিতে হইল; কারণ বলিতেছি।

 দ্বিতীয় দিন আমাদের আবার কাজ করিতে বাহিরে আনা হইল, কিন্তু শেতাঙ্গ দারাগার সঙ্গে নয়, —একজন কাফ্রি দারোগার সঙ্গে। সে আগের দিনের লোকটি নয়। এ লোকটিও বেশ ভাল ছিল, আমাদের কিছুই বলিত না।

 আমরাও ভাল ছিলাম। কারণ শরীরে যতখানি কুলায় ততখানি কাজ কৱিতাম। আমাদের যে কাজ দেওয়া হইয়াছিল তাহাও ছিল সাধারণ রকমের। সদর রাস্তার উপর মিউনিসিপ্যালিটির জমিতে গর্ত্ত করিবার ও পুরাইবার কাজ ছিল; তাহাতে ক্লান্তি আসা সম্ভব। আমি অনুভব