পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
কারাকাহিনী।

অন্যান্য পরিবর্ত্তন

 উপরে বলিয়াছি, দারোগার আমার উপরে বিশেষ খোসনজর ছিল না, সেই একটু কড়া ব্যবহার করিত। কিন্তু এ ভাব বেশী দিন রহিল না। সে যখন জানিতে পারিল যে আমি খাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে স্বয়ং সরকার বাহাদুরের সঙ্গে ঝগড়া করিয়া বসি, কিন্তু তখুনি আবার তাহার সকল আজ্ঞাই পালন করি, তখন সে তাহার আচরণ পরিবর্তন করিল। সে আমাকে যাহা খুসী করিতে দিত। এমন কি, পায়খানায় যাওয়ার এবং স্নান করিবার কষ্ট ও দূর হইয়া গেল। সে জানাইতও না যে তাহার হুকুম আমার উপরও চলিবে। সে বদ‍্লী হইবার পর তাহার স্থানে যে দারোগা আসিল, সে ছিল খুব উদার। সে আমায় ন্যায্য ও যোগ্য সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করিত। সে বলিত, ‘যে লোক নিজের জাতির জন্য লড়াই করে তাহাকে আমি খুব ভালবাসি। আমি নিজেই লড়াই করি, তোমাকে আমি কয়েদী বলিয়া মনে করি না। এই রকম নানা কথা সে বলিত।

 কিছু দিন পরে আমাকে সকালে ও সন্ধ্যায় আধঘণ্টার জন্য জেলের ভিতর পথে বেড়াইবার অনুমতি দেওয়া হইল। যখন বাহিরে বসিয়া কাজ করিতাম তখনও এই ব্যবস্থা বলবৎ রহিল। মনে হয়, যে সকল কয়েদীর বসিয়া কাজ করিতে হয় তাহাদের জন্য এইরূপ নিয়ম করা উচিত।

 আমি বেঞ্চের জন্য আবেদন করিয়াছিলাম, পাওয়া যায় নাই। কিছু দিন পরে বড় দারোগা তাহাও পাঠাইয়া দিল। জেনারাল স্মাট‍্স্ দুইখানি ধর্ম্ম পুস্তক পাঠাইয়া দিয়াছিলেন, সুতরাং মনে হইল, আমাকে যে কষ্ট দেওয়া হইতেছে তাহা তাঁহার আজ্ঞা অনুযায়ী নহে, বরং তাঁহার ও অন্য সকলের অজ্ঞাতসারে, আমাকে কাফ্রিদের মধ্যে গণ্য করাতেই এত কষ্ট।

 ..থা ত পরে স্পষ্ট জানিতে পারিয়াছিলাম, —আমাকে যে