পাতা:মহাত্মা বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর জীবনবৃত্তান্ত.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাত্মা বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী । হইয়াছিলেন । বন্ধুর প্রক্তি অকপট প্রণয় সত্ত্বেও অন্যায়ের প্রতি তাহার এমনই তীব্র ঘৃণা ছিল। যাহা হউক, যৌবনের প্রারম্ভে শিশু-প্রকৃতি লাইয়ু এবং সবল ও সতেজ মন লইয়া তিনি তাহার সমবয়স্ক বাল্যবন্ধু অঘোরনাথ গুপ্তের ( পরে সাধু অঘোরনাথ) সঙ্গে টােলের পড়া ছাড়িয়া কলিকাতায় আসিয়া সংস্কৃত কলেজে ভৰ্ত্তি হইলেন। তাহার | বয়স এই সময় প্ৰায় অষ্টাদশ বৎসর। অঘোরনাথের জন্মভূমিও শান্তিপুর। ইনি ১২৪৮ সনে ১৮ই অগ্রহায়ুণ শান্তিপুরে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমান শতাব্দীর বিলাস-পূর্ণ সভ্যতার যুগে অঘোরনাথের জীবন একটী অপূৰ্ব্ব পদার্থ। ইহাদের উভয়ের চরিত্রে অনেক বিষয়ে সামঞ্জস্য ছিল। একই জন্মভূমির জলবায়ু এবং একই হরিনামের মাহাত্ম্য যেন এই দুইটী বাল্য-বন্ধুকে ধীরে ধীরে ফুটাইয়া তুলিতেছিল। আর উভয়ের ধৰ্ম্মানুরাগ ক্রমে তাহদের অকপট বাল্যবন্ধুতাকে অচ্ছেদ্য করিয়া তুলিতেছিল। চুম্বক ও লৌহ যেমন পরস্পর পরস্পরের আকর্ষণে আকৃষ্ট হয়। এই দুইটী স্বভাব-সাধু বাল্যে তেমনিভাবে আকৃষ্ট হন। ক্ৰমে উভয়ের মধ্যে গভীর প্রণয় জন্মে, এবং পরবর্তী কালে উভয়ে অগ্নি-মন্ত্রে দীক্ষিত হইয়া জ্বলন্ত উৎসাহ ও প্রবল অনুরাগে সকল প্রকার ভয়-বিপদত বাধা । অগ্ৰাহা করিয়া ভারতের নগরে নগরে পল্লীতে পল্লীতে পরিত্ৰাণ-প্ৰদ সমাচার প্রচার করেন। যে শান্তিপুর চারি শত বৎসর পূৰ্ব্বে শ্ৰীগৌরাঙ্গ নিত্যানন্দ প্রভৃতি মহাভক্তগণের সমাগমে পুণ্য-ভূমিতে পরিণত হইয়াছিল, সেই শান্তিপুর আবার এই দুইটি স্বভাব-সাধুর সম্মিলনে গৌরবান্বিত হইল।