পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাদ্রিসাহেবের সহিত বিচার R O VO যাহা লিখিয়াছেন, তাহার উত্তরে রামমােহন রায় বলিতেছেন ;- “এতদেশীয় ব্যক্তিদের ও ইউরোপদেশীয়দের গাৰ্হস্থ্যধৰ্ম্মবিষয়ে, উৎপ্রেক্ষা দিয়া, দোষের নৃত্যুনাধিক্য অনায়াসে আমি দেখাইতে পারিতাম, কিন্তু শাস্ত্রীয়বিচারে এরূপ দ্বন্দ্ব করা অনুচিত হয় ; সুতরাং ত্যাহা হইতে নিবৃত্ত হইলাম। যেহেতু, ইহাতে অনেকের মনে অতুষ্টি জন্মিতে পারে।” রামমোহন রায় আধুনিক হিন্দুর গাৰ্হস্থ্যনীতির হীনতা স্বীকার করিতেন। অজ্ঞান ও জড়তাও স্বীকার করিতেন। কিন্তু খৃষ্টিয়ান মিশনারীরা আপনাদের গৌরব বৃদ্ধি করিবার জন্য, অমূলক ও অতিরঞ্জিত বৰ্ণনা করিতে ভালবাসিতেন । ( এখনও সেরূপ করিয়া থাকেন । ) রামমোহন রায় তাহারই প্ৰতিবাদ করিয়াছিলেন । এস্থলে রাজা হিন্দুর পক্ষ হইয়া ন্যায়ানুগত বিচারে যাহা বলা যায় তাহাই বলিয়াছেন। রাজার সময়ে, এদেশীয় ইয়োরোপীয়দিগের নীতিসম্বন্ধে অবস্থা ভাল ছিল না। এদেশস্থ ইয়োরোপীয় ও ফিরিঙ্গিাদিগের নীতি ও চরিত্র দেখিয়া তাহার আতিশয় অশ্রদ্ধা হইয়াছিল। কিন্তু রাজা ইংলণ্ডে গমন করিয়া সেখানকার ভদ্রলোকদিগের মধ্যে, চরিত্র ও নীতির শ্রেষ্ঠতা দর্শন করিয়া সন্তুষ্ট হইয়াছিলেন । বিশেষতঃ, ইংলণ্ডীয় মহিলািগণের চরিত্রের উচ্চতা ও পবিত্ৰত দেখিয়া তিনি যারপরনাই আনন্দিত হইয়াছিলেন। তিনি সেই আনন্দ ও সন্তোষ পুনঃপুনঃ প্ৰকাশ করিয়াছিলেন। রাজার সময়ে যে, ভারত প্ৰবাসী ইয়োরোপীয়দিগের গাৰ্হস্থ্য নীতি আতিশয় মন্দ ছিল, ইহা ভারতবর্যের ইয়োরোপীয় ইতিবৃত্তলেখকগণও স্বীকার করিয়াছেন। তঁহাদের মধ্যে গাৰ্হস্থ্যনীতি সম্বন্ধে যে আতিশয় দুৰ্গতি ঘটিয়াছিল, তাহার দুইটি প্ৰধান কারণ। প্ৰথম,-তখন এদেশে ইয়োরোপীয় স্ত্রীলোকের সংখ্যা অতিশয় অল্প ছিল। দ্বিতীয়,-তখন ইংলণ্ডে গমনাগমনের সুবিধা ছিল না।