পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২ মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত মাতার সদগুণ মহাজনগণের জীবনবৃত্ত পাঠ করিলে দেখিতে পাওয়া যায় যে, মাতার চরিত্র ও সদগুণ অনেকেরই মহত্ত্ব ও অসাধারণত্বের মূল । নেপোলিয়ান, ওয়াসিংটন, ম্যাটুসিনি, থিয়োডোবু পার্কাবু প্ৰভৃতি ইহার দৃষ্টান্তস্থল। রামমোহন রায়ের জননী যার-পর-নাই সদগুণশীলা রমণী ছিলেন। তাহার ন্যায় বুদ্ধিমতী ও ধৰ্ম্মপরায়ণ নারী বিরল ছিল। কোন প্রকার মিথ্যা বা কুৎসিত ব্যবহার তাহার নিকট প্রশ্রয় পাইত না। দেশপ্ৰচলিত ধৰ্ম্মে তাহার প্রগাঢ় বিশ্বাস ছিল । তাহার ধৰ্ম্মানুরাগ স্বভাবতঃ অতিশয় প্ৰবল ছিল। তঁহার শেষাবস্থায় তিনি জগন্নাথদর্শনের জন্য যাত্ৰা করেন। দেবদর্শনে যাইতে হইলে কষ্ট স্বীকার করিয়া যাইতে হয়, এই বিশ্বাসবশতঃ, সাংসারিক অবস্থা ভাল থাকা সত্ত্বেও, তিনি সঙ্গে একজন দাসী পৰ্য্যন্তও গ্ৰহণ করেন নাই ; এমন কি, পথে তাহার সুবিধা ও সুখের জন্য কোন প্রকার উপায় করিতেও দেন নাই ; দুঃখিনীর ন্যায় পদব্রজে শ্ৰীক্ষেত্র যাত্ৰা করিয়াছিলেন। পরলোকগমনের পূর্বে, এক বৎসরকাল, দাসীর ন্যায় জগন্নাথদেবের মন্দির সম্মাৰ্জনীর দ্বারা প্ৰত্যহ পরিস্কৃত করিতেন । আবার এরূপও কথিত আছে যে, তিনি মৃত্যুর এক বৎসব পূর্বে, রামমোহন রায়কে বলিয়াছিলেন, “রামমোহনা! তোমার মতই ঠিক। আমি অবলা স্ত্রীলোক, এবং অত্যন্ত বৃদ্ধ হইয়াছি ; সুতরাং যে সকল পৌত্তলিক অনুষ্ঠানে আমি সুখ পাইয়া থাকি, তাহা আর পরিত্যাগ করিতে পারি না ।” অনেক সরলবিশ্বাসী সাকারবাদী, ব্ৰহ্মজ্ঞানের শ্রেষ্ঠত স্বীকার করিয়া থাকেন। রাজা রামমোহন রায়ের মাতার সেই প্ৰকার ভাব বলিয়াই মনে হয :