পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭২ মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত অর্থাৎ অতি প্ৰাতে, কি শীতকালে, কি বর্ষাতে স্থানমার্জন, ভোজনাদি পাত্ৰমার্জন, গৃহলোপনাদি তাবৎ কৰ্ম্ম করিয়া থাকে, এবং সুপকারের কৰ্ম্ম বিনা বেতনে দিবসে ও রাত্ৰিতে করে, অর্থাৎ স্বামী, শ্বশুর, শাশুডী ও স্বামীর ভ্ৰাতৃবৰ্গ, অমাত্যবৰ্গ এ সকলের রন্ধন পরিবেশনাদি আপন আপন নিয়মিত কালে করে ; যেহেতু হিন্দুবর্গের অন্য জাতি অপেক্ষা ভাই সকল ও অমাত্য সকল একত্ৰ স্থিতি অধিক কাল করেন ; এই নিমিত্ত বিষয়ঘটিত ভ্ৰাতৃবিরোধ ইহাদের মধ্যে অধিক হইয়া থাকে; ঐ বন্ধনে ও পরিবেশনে যদি কোন অংশে ত্রুটি হয়, তবে তাহদের স্বামী, শাশুড়ী, দেবীর প্রভৃতি কি কি তিরস্কার না করেন ; এ সকলকেও স্ত্রীলোকেরা ধৰ্ম্ম-ভয়ে সহিষ্ণুতা করে, আর সকলের ভোজন হইলে ব্যঞ্জনাদি উদর পূরণের যোগ্য অথবা অযোগ্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট থাকে, তাহা সন্তোষপূর্বক আহার করিয়া কালযাপন করে । আর অনেক ব্ৰাহ্মণ, কায়স্থ, র্যাহাবদের ধনবিত্তা নাই, তাহারদের স্ত্রীলোক সকল গোসেবাদি কৰ্ম্ম করেন, এবং পাকাদির নিমিত্ত গোময়ের ঘোষী স্বহস্তে দেন, বৈকালে পুষ্করিণী অথবা নদী হইতে জলাহরণ করেন, রাত্রিতে শস্যাদি করা যাহা, ভূত্যের কৰ্ম্ম, তাহাও করেন, মধ্যে মধ্যে কোন কৰ্ম্মে কিঞ্চিৎ ত্রুটি হইলে তিরস্কার প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। যদ্যপি কদাচিৎ ঐ স্বামীর ধনবত্ত হইল, তবে ঐ স্ত্রীর সর্বপ্রকার জ্ঞাতসারে এবং দৃষ্টিগোচরে প্রায় ব্যভিচারদোষে মগ্ন হয়, এবং মাসমধ্যে এক দিবসও তাহার সহিত আলাপ নাই । স্বামী দরিদ্র যে পৰ্য্যন্ত থাকেন, তাবৎ নানাপ্রকার কায়ক্লেশ পায়, আর দৈবাৎ ধনবান হইলে মানসন্দুঃখে৷ কাতর হয়। এসকল দুঃখ ও মনস্তাপ কেবল ধৰ্ম্মভয়েই তাহারা সহিষ্ণুতা করে। আর যাহার স্বামী দুই তিন স্ত্রীকে লইয়া গাৰ্হস্থ্য করে, তাহারা দিবারাত্রি মনস্তাপ ও কলহের ভাজন হয়, অথচ