পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজা রামমোহন রায়ের ধৰ্ম্মবিষয়ক মত GG \) মধ্যে মতভেদ দৃষ্ট হয়। ধৰ্ম্মের অনুষ্ঠানে এবং ধৰ্ম্মবিষয়ক অন্যান্য মত সম্বন্ধেও বিভিন্ন ধৰ্ম্মাবলম্বীর মধ্যে পরস্পর প্রভেদ লক্ষিত হয় । রামমোহন রায় বলিতেছেন যে, পরমেশ্বরের স্বরূপসম্বন্ধে বিভিন্ন ধৰ্ম্মাবলম্বীগণের মত ও বিশ্বাস বিভিন্ন প্ৰকার । তিনি যাহা বলিয়াছেন, তাহার তাৎপৰ্য্য এই যে, লোকে যেমন পরমেশ্বরকে ব্ৰহ্মা, জিহোবা, আল্লা প্রভৃতি ভিন্ন ভিন্ন নাম দিয়াছেন, সেইরূপ র্তাহাদের ঈশ্বরসম্বন্ধীয় জ্ঞানও ভিন্ন প্রকার। কেহ কৃষ্ণকে ভজনা করিতেছেন, কেহব। খ্ৰীষ্টকে ত্ৰাণকৰ্ত্তা বলিয়া স্বীকার করিতেছেন । এই উভয় প্রকার লোকের ঈশ্বর সম্বন্ধীয় জ্ঞান ঠিক এক প্রকার নহে। ধৰ্ম্মবিষয়ক অন্যান্য মত সম্বন্ধেও বিভিন্ন ধৰ্ম্মাবলম্বীর মধ্যে মতভেদ দৃষ্ট হয়। কে আমাদের পরিত্ৰাত, ইহা লইয়া বিভিন্ন ধৰ্ম্মাবলম্বীর মধ্যে মতভেদ । কেহ বলেন খৃষ্ট, কেহ বলেন কৃষ্ণ, কেহ বলেন মহম্মদ পয়গম্বর। পরিত্ৰাণ কিসে হয় ? কৰ্ম্মে কি ভক্তিতে ? এ বিষয়ে অত্যন্ত মতভেদ । পরিত্ৰাণ কাহাকে বলে ? পারলোক কি ? পারলৌকিক অবস্থা কিরূপ ? এই সকল বিষয়ে বিভিন্ন ধৰ্ম্ম-সম্প্রদায়ের মধ্যে অত্যন্ত মতভেদ দৃষ্ট হয়। ধৰ্ম্মের। কাৰ্য্যগত বিভাগেও বিশেষ প্রকার বিভিন্নতা দেখা যায়। শুদ্ধ কি, অশুদ্ধ কি, ব্যবহাৰ্য্য কি, অব্যবহাৰ্য্য কি, বিধি কি, নিষেধ কি, হারাম কি, হালাল কি, ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে যার-পর নাই ভিন্নতা লক্ষিত হয়। সাধনপ্রণালী ও উপাসনাপ্ৰণালী বিষয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে গুরুতর প্রভেদ বৰ্ত্তমান। এই সকল কারণে রাজা সিদ্ধান্ত করিতেছেন যে, মনুষ্য স্বভাবতঃ এক অনাদি পুরুষকে বিশ্বাস করিয়া থাকে। এইরূপ বিশ্বাস বিশ্বজনীন। সুতরাং ইহা মনুষ্যের পক্ষে স্বাভাবিক। এক জগৎকৰ্ত্তা পরমেশ্বরে বিশ্বাস, কোন কৃত্রিম উপায়ে, কেবল অভ্যাসদ্বারা উৎপন্ন হয় না । যে বিশ্বাস