পাতা:মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় (সচিত্র) - নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫.৯২ মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত সেই কবিতাটির অর্থ এই যে, কোন জীবের অনিষ্ট করিও না । কোন জীবের অনিষ্ট না করিয়া তোমার যাহ। ইচ্ছা হয় কর । কারণ, আমাদের মতে, অপরের অনিষ্ট করা ভিন্ন অন্য কোন পাপ নাই । আমরা এতক্ষণ পৰ্য্যন্ত রাজার যে সকল মতেব কথা বলিলাম,তাহার সারমর্ম এই যে, জগতে প্ৰচলিত ধৰ্ম্ম সকল অলৌকিক ভাবে পরমেশ্বরের বিধান নহে । সকল ধৰ্ম্মই সত্য, কেনন। সকল ধৰ্ম্মই পরমেশ্বরের বিধান, এ মতও যুক্তিবিরুদ্ধ। কোন ধৰ্ম্মে পূর্ণনীতি ও পূর্ণসত্য প্রাপ্ত হওয়া যায় না। ধৰ্ম্ম সকল আপেক্ষিক, মনুষ্যকৃত। স্বাভাবিক ও ঐতিহাসিক কারণে, পরমেশ্বরের বিধাতৃত্বেব অধীনে, সকল ধৰ্ম্মের উৎপত্তি । সকল ধৰ্ম্মের মধ্যেই একটি মধ্যবৰ্ত্তী সত্য আছে। কিন্তু মানবীয় ভ্ৰমপ্ৰমাদ, অপূর্ণতা ও দুর্বলতাজনিত দোষ সকল, ঐ সত্যের আবরণ রূপে বৰ্ত্তমান রহিয়াছে। রাজা কোন বিশেষ বিধানে কেন বিশ্বাস করিতেন না,তাহা পরিষ্কার করিয়া বলিয়াছেন। তহফাতুল মোওয়াহেদীন গ্ৰন্থ লিখিবার পরবত্তী সময়ে, অর্থাৎ বেদবেদান্ত ও বাইবেল বিষয়ক গ্ৰন্থ লিখিবাব সময়ে, রাজা আর একটু অগ্রসর হইয়াছিলেন । তহফাতুল মোওয়াহেদীন গ্রন্থে কেবল যুক্তিবাদ, শাস্ত্ৰনিরপেক্ষ যুক্তিবাদ । পরে রাজা, শাস্ত্ৰ স্বীকার করিতেন, কিন্তু অলৌকিকভাবে শাস্ত্র বা বিধান কখনই স্বীকার করেন। নাই। অর্থাৎ তহফাতুল মোওয়াহেদ্দীন গ্রন্থের অভাবাত্মক মতগুলি রাজার চিরকালই ছিল। তবে, পরে কতকগুলি ভাবাত্মক মতের বিকাশ হইয়াছিল। যেমন, যুক্তিসম্মত শাস্ত্ৰ-স্বীকার, বিধান-স্বীকার, ঋষি ও মহাপুরুষদিগের প্রতি ভক্তি, র্তাহাদের উপদেশে শ্রদ্ধা, আত্মজ্ঞানলাভের জন্য গুরুর আবশ্যকতা স্বীকার, ব্যক্তিগত যুক্তিবাদ অতিক্ৰম করিয়া, জাতীয় সমষ্টিকৃত জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা, কোন প্ৰচলিত শাস্ত্ৰানুযায়ী জাতীয় আচার ব্যবহার নিয়মিত হওয়ার আবশ্যকতা স্বীকার, এই সকল মতিও