পাতা:মহানপুরুষদের সান্নিধ্যে - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহানপুরুষদের সান্নিধ্যে
পক্ষে তাহা ছিল অসহ্য রকমের ফাঁকা ও অবসাদকর। শুধু তাহাই নয়, এষ্ট মেস-জীবনের সংস্পৰ্শ আমার মতন বালকের পক্ষে ক্ষতিকর হইবে, এ আশঙ্কাও নিতান্ত কম ছিল না । কারণ, গাৰ্হস্থ্য পরিবেশবর্জ্জিত এই লোক গুলির মধ্যে কয়েকজনের জীবনে নৈতিক আদর্শের বালাই বড় একটা ছিল না ।
সৌভাগ্যক্ৰমে শীঘ্রই কলিকাতা সংস্কৃত কলেজে, যেখানে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর অধ্যক্ষরূপে বিরাজিত, আমাকে ভৰ্ত্তি করিয়া দেওয়া হইল । বিদ্যাসাগর মহাশয় তখন কলিকাতার তরুণদের আদর্শ পুৰুষ, এক বিরাট প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তিনি অধিকারী ।
আমরা যখন কলেজে ঢুকিলাম, তখন সংস্কৃত শিক্ষার ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগরীয় যুগ চলিয়াছে। কয়েক বৎসর পূর্ব্বে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্ৰ কলেজের বহু রীতিনীতির গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সাধন করিয়াছেন। প্ৰথমতঃ, পূর্ব্বের ন্যায় আর ব্ৰাহ্মণ ও বৈদ্য ছাত্ৰ ভিন্ন অপরাপর জাতির ছাত্ৰকে প্ৰত্যাখ্যান করা হইতেছে না । দ্বিতীয়তঃ, মুগ্ধবোধ ব্যাকরণ দিয়া আর ছেলেদের শিক্ষা আরম্ভ করা হয় না। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নূতন ভঙ্গীতে লিখিত বোধোদয়, কথামালা ও উপক্ৰমণিকা ইহার স্থান গ্ৰহণ করিয়াছে। অবশ্য, তখন পৰ্য্যস্ত কলেজের রক্ষণশীল পণ্ডিতগণ এই বৈপ্লবিক পরিবর্ত্তনের বিরুদ্ধে মত প্ৰকাশ করিতেছিলেন, ইহা আমরা লক্ষ্য করিতাম। তৃতীয়তঃ, অবৈতনিক শিক্ষার পরিবৰ্ত্তে বেতন প্ৰদানের প্রথা তখন অনুসৃত হইতেছে।