পাতা:মহানপুরুষদের সান্নিধ্যে - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ সে সময়ে হিন্দু ও ব্ৰাহ্মসম্প্রদায়ের মধ্যে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলিয়াছে। তদুপরি পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রবত্তিত বিধবা বিবাহ আন্দোলন রক্ষণশীল হিন্দুসমাজে এক গভীর আলোড়ন তুলিয়াছে। আমরা তরুণ সম্প্রদায় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সংস্কারধৰ্ম্মী আন্দোলনের কৰ্ম্মী। আমার প্রেরণায় উদ্ধৃদ্ধ হইয়া আমারই এক সহপাঠী বন্ধু তাহার পিতামাতা ও আত্মীয় স্বজনের মতের বিরুদ্ধে একটি বিধবা বালিকাকে বিবাহ করিয়া ফেলেন। বলাবাহুল্য এজন্য তাহার পিতা ক্রুদ্ধ হইয়া তাহাকে পরিত্যাগ করিলেন। বন্ধু ও বন্ধুপত্নীর জীবনে এবার এক চরম দুৰ্দশা দেখা দিল । আর্থিক ও সামাজিক অস্বচ্ছন্দ্যের মধ্যে র্তাহারা বিশেষভাবে আমার উপরই নির্ভর করিতে থাকিলেন । আর এ সম্পর্কে আমার নিজের দিক হইতেও একটি প্ৰকাণ্ড নৈতিক দায়িত্ব ছিল, অবশ্য এ সমস্যার জটিলতাও কিছু কম ছিল না। আমার পিতা নিষ্ঠাবান হিন্দু। তাহাকে না জানাইয়া বা তাহার অনুমতি ছাড়া এজাতীয় কাৰ্য্যে যোগ করিতে আমার মন প্রথমটায় সায় দেয় নাই। আমি তাই সমস্ত ঘটনাটির বিশদ বিবরণ জানাইয়া পিতার নিকট অনুমতি চাহিয়া পাঠাই । বিদ্যাসাগর মহাশয় পিতৃদেবের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, তাহার প্রবণ্ডিত প্রথার প্রকাশ্যে বিরুদ্ধাচরণ করাও পিতার দিক দিয়া অসুবিধাজনক । কাজেই তিনি আমাকে এসম্পর্কে কিছু না জানাইয়া মাতুল দ্বারকানাথকে লিখিলেন--তিনি যেন এ সব কাৰ্য্য হইতে আমাকে প্ৰতিনিবৃত্ত করেন।