পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
মহাভারত।

নন্দন! তুমি স্বভার্য্য। প্রমরাকে স্বীয় স্বায়ুর আর্দ ভাগ প্রদান কর, তাহা হইলেই সে পুনরায় জীবন প্রাপ্ত হইবেক। রুরু কহিলেন, আমি প্রমরাকে আয়ুর অন্ধ্র প্রদান করিতেছি, সে পুনর্জীবিত হউক। তখন গন্ধর্বরাজ ও দেবদূত উভয় ধর্ম্মরাজের নিকটে গিয়া নিবেদন করিলেন, হে ধর্ম্মরাজ! যদি আপনি অনুমতি করেন, তবে রুরুভার্য্যা প্রমদ্বরা তদীয় অৰ্দ্ধ আয়ু প্রাপ্ত হইয়া পুনজীবিত হয়। ধর্ম্মরাজ কহিলেন, হে দেবদূত! যদি তোমার ইচ্ছা হয়, প্রমদর। রুরুর অৰ্দ্ধ আয়ু পাইয়া পুনর্জীবিত হউক। দেব রাজ এইরূপ কহিবামাত্র বরবর্ণিণী প্রমদ্বরা রুরুর অর্থ আয়ু লাভ করিয়া সুপ্তোখির ন্যায় মৃত্যুশয্যা হইতে গাত্রেন্থিনি করিল।

 ভবিষ্য বৃত্তান্তে দৃষ্ট হইয়াছে যে, ভার্য্যার্থে মহাতেজস্বী রুরুর এই রূপে অৰ্দ্ধ আয়ু লুপ্ত হইয়াছিল।

 এই রূপে রুরুর অর্দ্ধ আয়ু লাভ দ্বারা প্রমদ্বয়ার পুনর্বার জীবনপ্রাপ্তি হইলে, তাহাদের পিতারা পরম প্রীতিপ্রাপ্ত হইয়া শুভ দিবসে উভয়ের উদ্বাহবিধি সমাধান করিলেন, তাঁহারাও পরস্পর হিতৈষী হইয়া পরম সুখে কালযাপন করিতে লাগিলেন। রুরু এবারে দুর্লভ। ভার্য্য লাভ করিয়া সর্পকুলধ্বংসার্থে প্রতিজ্ঞা করিলেন। সর্পদর্শনমাত্র কোপপরতন্ত্র হইয়। শস্ত্র প্রহার দ্বারা তাহার প্রাণসংহার করেন। এই রূপে সৰ্পৰধপ্রতিজ্ঞারূঢ় হইয়া এক দিবস মহান প্রবেশ পূর্বক অবলোকন করিলেন, এক অতি বৃদ্ধ জীর্ণকায় ভুত শয়ন করিয়া আছে। তিনি কালদণ্ডসম দণ্ড উদ্ধৃত করিয়া তাহাকে আঘাত করিতে উদ্যত হইবামাত্র ডুণ্ডুভ কহিল, হে তপোধন! আমি তোমার কোন অপরাধ করি নাই; তুমি কেন অকাপ্রণে রেষাবেশপরবশ হইয়া আমার প্রাণবধের উদ্যম করিতেছ?