পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দশম অধ্যায়— পৌলোমপর্ব্ব।

রুরু কহিলেন, হে উরগ! এক দুষ্ট ভুজঙ্গ আমার প্রাণসমা। ভার্যাকে দংশন করিয়াছিল, তদবধি আমি এই অনুপ্লজঘনীয় প্রতিজ্ঞা করিয়াছি যে, দর্শনমাত্র সর্পের প্রাণদণ্ড করিব। সেই নিমিত্ত অদ্য আমি তোমার প্রাণসংহার করিতে উদ্যত হইয়াছি। ডুণ্ডুভ কহিল, হে তপোবন! যাহারা মনুষকে দংশন করে, সে সকল সর্প স্বতন্ত্র, ডুণ্ডুভরা সে জাতি নহে; অতএব সর্পের নাম গন্ধ পাইয়া বিনা অপরাধে ডুঙুভদিগের প্রাণহিংসা করা তোমার উচিত নহে। আক্ষেপের বিষয় এই, ভুণুভদিগের প্রবৃত্তি ও সুখভোগ অন্যান্য সর্পের সমান নহে; কিন্তু অনর্থ ঘটনা ও দুঃখ ভোগের সময় সমানভাগী। যাহা হউক, তুমি ধর্ম্মজ্ঞ হইয়া হতভাগ্য ভুভদিগের প্রাণহিংসা করিও না।

 রুরু সর্পের এই যুক্তিযুক্ত কাতর উক্তি শ্রবণে তাহাকে ডুণ্ডুভ নিশ্চয় করিয়া তাহার প্রাণবধ করিলেন না। অনন্তর প্রশান্ত বচনে জিজ্ঞাসা করিলেন, হে ভুজগ! তুমি কে, কি নিমিত্তই বা তুমি সর্পযোনি প্রাপ্ত হইয়াছ, বল। ডুণ্ডুভ কহিল, পূর্ব কালে আমি সহস্রপাদ নামে ঋষি ছিলাম, পরে ব্রহ্মশাপে সর্পযযানি প্রাপ্ত হইয়াছি। ইহা শুনিয়া রুরু কহিলেন, হে ডুঙুভ! ব্রাহ্মণ কি কারণে কুপিত হইয়া তোমাকে শাপ দিয়াছেন, এবং আর কত কালই বা তোমাকে এই কলেবরে কালযাপন করিতে হইবে, ইহার সবিশেষ শুনিতে বাসনা করি।

১৩