পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একাদশ অধ্যায়— পৌলোমপর্ব্ব।

ডুণ্ডুভ কহিল, পূর্ব কালে খগম নামে এক সত্যবাদী তপোৰীর্যসম্পন্ন ব্রাহ্মণ আমার বাল্যকালের সখা ছিলেন। এক দিবস তিনি অগ্নিহোত্রানুষ্ঠানে সাতিশয় ব্যাসক্ত আছেন, এমন সময়ে আমি, বালস্বভাবসুলভ কৌতূহলপরতন্ত্র হইয়া, তৃণ দ্বারা এক ভুজঙ্গ নির্মাণ করিয়া তাহাকে ভয় প্রদর্শন করিলাম। তিনি মুচ্ছিত হইলেন, কিন্তু চেতনাপ্রাপ্তি হইলে কোপানলে দগ্ধ হইয়া কহিলেন, আমাকে ভয় প্রদর্শন করিবার নিমিত্ত যাদৃশ নির্বী সর্প নিৰ্মাণ করিয়াছ, আমার শাপে ভুমি তাদৃশ সর্প হইয়া জন্ম গ্রহণ করিবে। আমি তাহার তপস্যার প্রভাব অবগত ছিলাম; অতএব অতিশয় উদ্বিগ্ন হইয়া প্রণতি পূর্বক কৃতাঞ্জলিপুটে সম্মুখে দাড়াইয়া নিবেদন করিলাম, ভ্রাতঃ! আমি সখা বলিয়া পরিহাস করিবার নিমিত্ত হাসিতে হাসিতে এই কর্ম্ম করিয়াছি, এক্ষণে ক্ষমা করিয়া শাপ নিবারণ কর।

 খগম আমাকে নিতান্ত কাতর দেখিয়া মুহুর্মুহুঃ উষ্ণ নিশ্বাস পরিত্যাগ পূর্ব্বক ব্যাকুল চিত্তে কহিলেন, দেখ, আমি যাহা কহিয়াছি, কোন ক্রমেই তাহার অন্যথা হইবেক না; তবে এখন যাহা কহি, অবধান পূর্ব্বক শ্রবণ করিয়া সর্ব কাল স্মরণ করিয়া রাখিৰে। মহর্ষি প্রমতির রুরু নামে এক পরম পবিত্র পুত্র জন্মিবেন, তাহার দর্শনে তোমার শাপ মোচন হইবেক। আপনি রুরু নামে খ্যাত ও প্রতিরও অত্যুজ বটেন। আপনার দর্শন পাইয়াছি, এক্ষণে স্বরূপ প্রাপ্ত হইয়া আপনাকে হিতোপদেশ দিতেছি, শ্রবণ করুন।