পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
মহাভারত।

দিলেন। দেবরাজ তৎপৃষ্ঠে অধিষ্ঠিত শৈলরাজকে যন্ত্রসহকারে চালিত করিলেন।

 এই রূপে অমরগণ মন্দরকে মন্থনদণ্ড ও বাসুকিকে মন্থনচ্ছু করিয়া অমৃতলাভাভিলাষে সলিলনিধি সমুদ্রের মন্থন আরম্ভ করিলেন। মহাবল দানবাহ্রদল রঞ্জু স্থানীয় নাগরাজের মুখদেশ ও দেবগণ তাঁহার পুচ্ছদেশ ধারণ করিলেন। ভগবান্ অনন্তদেব নারায়ণের অপর মূর্তি, এই নিমিত্ত তিনি তাঁহার দুর্বিষহ বিষের প্রভাব সংবরণ করিয়া দিলেন। দেবতারা মন্থনার্থে নাগরাজ বাসুকিকে বল পূর্বক আকর্ষণ করাতে, তাঁহার মুখ হইতে বারংবার ধূম ও অগ্নিশিখ সহিত অতি প্রভূত শ্বাসবায়ু নিঃসৃত হইতে লাগিল। ঐ সমস্ত শ্বাসবায়ু সমবেত হইয়া বিদ্যুৎ সহিত মেঘসমূহরূপে পরিণত হইল এবং শ্রান্ত ও সন্তপ্ত দেবদানবদিগের উপর বারি বর্ষণ করিতে আরম্ভ করিল। আর সেই শৈলের শিখরদেশ হইতে সমস্তুতঃ পুষ্পবৃষ্টি হইতে লাগিল।

 এই রূপে মন্দরগিরি দ্বারা সুরাসুরগণ কর্তৃক মথ্যমান সমুদ্র হইতে মেঘরবানুকারী বিশাল শব্দ হইতে লাগিল। নানাবিধ শত শত জলচরগণ মন্দরগিরির মর্দনে নিষ্পিষ্ট হইয়া পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হইল। পাতালতলবাসী অন্যান্য বহুবিধ জলীয় প্রাণিগণ মন্দরাঘাতে প্রাণত্যাগ করিল। গিরিরাজ অনবরত ভ্রাম্যমাণ হওয়াতে, তদীয় শিখরদেশস্থিত অতি প্রকাণ্ড মহীরুহ সকল পরস্পর সংঘৃষ্ট হইয়া পতগগণ সহিত নিপতিত হইতে লাগিল। যেমন নীলবর্ণ জলধর সৌদামিনীমণ্ডল দ্বারা সমবৃত হয়, তোপ মন্দর সেই সমস্ত ভূরুহের পরস্পর সংঘর্ষণসস্তৃত অতি প্রভূত হুতাশনের শিখা সমূহ দ্বারা সমাবৃত হইল। ঐ হুতাশন মশঃ প্রবল হইয়া অরণ্যবিনির্গত কুঞ্জর ও কেশৱী সকল