পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আস্তীকপর্ব্ব।
১৩৭

সহস্র নিষাদ ভক্ষণ করিয়াছি, কিন্তু ক্ষুধানিবৃত্তি হয় নাই। অতএব, যাহা আহার করিয়া অমৃত আহরণ করিতে পারি, আপনি এরূপ কোনও ভক্ষ্য দ্রব্য নির্দেশ করুন। কশ্যপ কহিলেন, বৎস! সম্মুখে সরোবর অবলোকন করিতেছ, ঐ পবিত্র সরোবর দেবলোকেও বিখ্যাত। তথায় উপস্থিত হইয়া দেখিতে পাইবে, এক হস্তী অম্মুখে কূর্ম্মরূপী স্বীয় জ্যেষ্ঠ সহোদরকে আকর্ষণ করিতেছে। আমি তাহাদিগের পূর্ব জন্মের বৈরকারণ ও আকারের পরিমাণ সবিস্তর বর্ণন করিতেছি, শ্রবণ কর।

 বিভাবসু নামে অতি ক্রোধাবিষ্ট মহর্ষি ছিলেন। তাহার কনিষ্ঠ সহোদরের নাম সুপ্রতীক। সুপ্রতীকের এরূপ অভিলাষ নহে যে, পৈতৃক ধন অবিভক্ত থাকে; এজন্য তিনি জোষ্ঠের নিকট সর্ব্বদাই বিভাগের কথা উত্থাপন করেন। এক দিন বিভাবসু বিরক্ত হইয়া সুপ্রতীককে কহিলেন, দেখ, অনেকেই মোহন্ধি হইয়া সর্বদাই বিভাগ করিতে বাঞ্ছা করে; কিন্তু বিভক্ত হইয়াই অর্থমোহে বিমোহিত হইয়া পরস্পরে বিরোধ আরম্ভ করে। স্বার্থপর মূঢ় ভ্রাতারা ধনার্থে পৃথগৃভূত হইলে, শত্রুরা মিত্রভাবে প্রবিষ্ট হইয়া তাহাদের মনোভঙ্গ জন্মাইয়া দেয়; এবং ক্রমে ক্রমে ভগ্নস্নেহ হইলে, তাহারা পরস্পরের নিকট পরস্পরের দোষারোপ করিয়া বৈর বৃদ্ধি করিয়া দিতে থাকে; এইরূপ হইলে অবিলম্বেই তাহাদিগের সর্বনাশ ঘটে। এই নিমিত্ত ভ্রাতৃবিভাগ সাধুর্দিগের অনুমোদিত নহে। তুমি নিতান্ত মূঢ় হইয়া ধনবিভাগ প্রার্থনা করিতেছ, কোনও ক্রমেই আমার বারণ শুনিতেছ না; অতএব হস্তিয়োনি প্রাপ্ত হইবে। সুপ্রতীক এই রূপে অভিশপ্ত হইয়া বিভাবসুকে কহিলেন,

১৮