পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আস্তীকপর্ব্ব।
১৪৯

সর্ব্বভূতভয়ঙ্কর ঘোতর গর্জন করিতে করিতে অন্তরীক্ষে আরোহণ করিলেন। ইন্দ্রাদি দেবগণ গরুড়কে নভস্তলস্থিত অবলোকন করিয়া পট্টিশ, পরিঘ, শূল, গদা, প্রজ্বলিত ক্ষুর ও সূর্য্যরূপী চক্র ইত্যাদি বহুবিধ অস্ত্র দ্বারা তাহাকে অচ্ছিন্ন করিলেন। প্রতাপৰা গরুড়, এই রূপে সুরগণ কর্তৃক নানা অস্ত্র দ্বারা সমস্ততঃ আহত হইয়াও, ঘোরতর যুদ্ধ করিতে লাগিলেন। তিনি কোনও ক্রমেই বিচলিত হইলেন না, বরং পক্ষদ্বয় ও বক্ষঃস্থল দ্বারা - বেগণকে বিক্ষিপ্ত করিতে আরম্ভ করিলেন। দেবতারা গরুড় কর্তৃক বিক্ষিপ্ত, তাড়িত ও আহত হইয়া, শোণিত বমন করিতে করিতে ইতস্ততঃ পলায়ন করিতে লাগিলেন। তন্মধ্যে, সাধ্য ও গন্ধর্বগণ পূর্ব্ব দিকে, বস্ত্র ও রুদ্রগণ দক্ষিণ দিকে, আদিত্যগণ পশ্চিম দিকে, আর অশ্বিনীকুমারেরা উত্তর দিকে, পলাইলেন।

 তদনন্তর গগনচর পক্ষিরাজ মহাবীর পরাক্রান্ত অশ্বক্রন্দ, রেণুক, ক্রথন, তপন, উলুক, শ্বসন, নিমিষ, প্ররুজ, পুলিন এই নব যক্ষের সহিত সংগ্রাম আরম্ভ করিলেন। প্রলয়কালে রুদ্রদেব যেরূপ ভয়ানক হইয়া থাকেন, তিনিও তদ্রুপ হইয়া পক্ষ, নখ ও চঞ্চুপুটের অগ্রভাগ দ্বারা তাহাদিগকে খণ্ড খণ্ড করিলেন। মহাবল মহোৎসাহ যক্ষগণ গরুড়প্রহারে সর্বাঙ্গে বিক্ষত হইয়া রুধিরধারাবর্ষী জলধরসমুহের ন্যায় আভাসমান হইল।

 পরিশেষে পগরাজ সেই সমস্ত যক্ষের প্রাণসংহার করিয়া অমৃত স্থানে উপস্থিত হইলেন, দেখিলেন, অগ্নি অমৃতের চতুর্দি বেষ্টন করিয়া আছে; ঐ অগ্নির জ্বালা অতি ভয়ানক, উহা শিখাসমূহ দ্বারা নভোমণ্ডল আচ্ছন্ন করিয়া আছে; বোধ হয়, যেন প্রচণ্ড বায়ুবেগে চালিত হইয়া সূর্য্যদেবকে দগ্ধ