পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সপ্তত্রিংশ অধ্যায়— আস্তীকপর্ব্ব।

উগ্রশ্রবাঃ কহিলেন, নাকুলশ্রেষ্ঠ বাসুকি মাতৃদত্ত শাপ শ্রবণনন্তর সেই শাপমোচনের উপায় চিন্তা করিতে লাগিলেন। তৎপরে তিনি ঐরাবত প্রভৃতি ধর্ম্মপরায়ণ সমস্ত ভ্রাতৃগণের সহিত মন্ত্রণা আরম্ভ করিলেন। বাসুকি কহিলেন, হে ভ্রাতৃগণ! জননী আমাদিগকে যে শাপ দিয়াছেন, তাহা তোমরা সকলেই বিদিত অছি। আইস, সকলে মিলিয়া সেই শাপমোচনের উপায় চিন্তা করি। সর্বপ্রকার শাপেরই অন্যথা হইবার উপায় আছে; কিন্তু মাতৃদত্ত শাপ হইতে পরিত্রাণের কোনও পথ নাই। বিশেষত, জননী অবিনাশী, অপ্রমেয়স্বরূপ, সত্যলোকাধিপতি ব্রহ্মার সমক্ষে আমাদিগকে শপ দিয়াছেন, ইহাতেই আমার হৃৎকম্প হইতেছে। নিশ্চিত বুঝিলাম, আমাদের সমূলে বিনাশ উপস্থিত; নতুবা কি নিমিত্ত অবিনাশী ভগবান শাপদানকালে জননীকে নিবারণ করিলেন না? অতএব, যাহাতে সমস্ত নাগকুলের ভাবী বিপন্ হইতে পরিত্রাণ হয়, আইস, সকলে একত্র হইয়া তাহার উপায় চিন্তা করি; কোনও ক্রমেই কালাতিপাত করা উচিত নহে। আমরা সকলেই বুদ্ধিমান্ ও বিচক্ষণ; মন্ত্রণা করিয়া অবশ্যই শাপমোক্ষের কোনও উপায় উদ্ভাবিত করিতে পারি। দেখ! পূর্ব্ব কালে ভগবান্ অগ্নি অন্তর্হিত হইয়াছিলেন, কিন্তু দেবতারা মন্ত্রণাৰলে ভঁহার উদ্ভাবন করেন। এক্ষণে যাহাতে জনমেজয়ের সর্পস না হইতে পায়, অথবা বিফল হইয়া যায়, এমন উপায় করিতে হইবেক।