পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আস্তীকপর্ব্ব।
১৭৭

সিদ্ধির অদ্বিতীয় সাধন, ক্ষমাশীলের ইহলোক পরলোক উভয় জয়। অতএব সতত ক্ষমাশীল ও জিতেন্দ্রিয় হইয়া চলিবে। ক্ষমাশীল হইলে ব্রহ্মলোক প্রাপ্ত হইবে। আমি শমপথাবলম্বী হইয়া যাহা করিতে পারি তাহা করি; রাজাকে এই সংবাদ পাঠাইয়া দি যে, আমার পুত্র নিতান্ত বালক, অদ্যাপি তাহার বুদ্ধির পরিপাক হয় নাই; তুমি আমার যে অবমাননা করিয়া ছিলে, সে তদ্দর্শনে অমর্ষবশ হইয়া তোমাকে শাপ দিয়াছে।

 এইরূপ কহিয়া সুব্রত তপঃপরায়ণ শমীকমুনি গৌরমুখনামক সুশীল সমাহিত স্বীয় শিষ্যকে রাজ। পরীক্ষিতের নিকট পাঠাইলেন, এবং কহিয়া দিলেন, অর্থে কুশল জিজ্ঞাসা করিয়া পরে এই সংবাদ নিবেদন করিবে। গৌরমুখ, গুরুর আদেশানুসারে জরায় হস্তিনাপুরে উপস্থিত হইয়া, দ্বারপাল দ্বারা সংবাদ দিয়া রাজভবনে প্রবেশ করিলেন, এবং রাজকৃত অভ্যাগতসৎকার স্বীকার ও শ্রান্তি পরিহার করিয়া আদ্যোপান্ত শমীকৰাক্য নরপতিগোচরে নিবেদন করিতে লাগিলেন, মহারাজ! শান্ত, দান্ত, হাতপাঃ পরমধর্মাত্মা, মৌনব্রতপরায়ণ শমীকঋষি আপনকার রাজ্যে বাস করেন। আপনি অনী দ্বারা তাঁহার দেশে মৃত সর্প ক্ষেপণ করিয়া আসিয়াছেন। তিনি ক্ষমা করিয়াছিলেন, কিন্তু তাহার পুল ক্ষমা না করিয়া পিতার অজ্ঞাতসারে আপনাকে এই শাপ দিয়াছেন, তক্ষক সপ্তরাত্রমধ্যে আপনকার প্রাণসংহার করিবেক। শমীকমুনি পুলকে শাপনিবারণের নিমিত্ত বারংবার কহিয়াছিলেন, কিন্তু কাহারও সাধ্য নাই যে, সে শাপ অন্যথা করে। মহর্ষি কুপিত পুত্রকে কোনও ক্রমেই শান্ত করিতে না পারিয়া, পরিশেষে আপনকার হিতার্থে আমাকে সংবাদ দিতে িপাঠাইয়াছেন।

২৩