পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮২
মহাভারত।

রাজাকে আশীর্বাদ স্বরূপ ফল কুশ ও জল প্রদান করিবে। ভুজঙ্গমগণ, তক্ষকের আদেশানুসারে তথায় উপস্থিত হইয়া, রাজাকে কুশ কুসুম ফল জল প্রদান পূর্বক যথাবিধি আশীর্বাদ করিল। বীর্যবান্ রাজেন্দ্র পরীক্ষিৎ সেই সকল গ্রহণ করিলেন, এবং তাঁহাদের কার্য শেষ করিয়া দিয়া গমন করিতে কহিলেন।

 কপটতাপসবেশধারী নাগগণ নির্গত হইলে পর, রাজা যাবতীয় অমাত্য ও সুহৃদ্বৰ্গকে কহিলেন, আইস, সকলে মিলিয়া তাপসগণের আনীত এই, সকল সুস্বাদু ফল ভক্ষণ করি। রাজা ব্রহ্মশাপমূলক দুর্দৈব প্রযোজিত হইয়া সচিবগণসমভিব্যহারে ফল ভক্ষণে প্রবৃত্ত হইলেন। তক্ষক যে ফলে প্রবিষ্ট ছিলেন, দৈব্যগত্যা রাজা স্বয়ং ভক্ষণার্থে সেই ফল লইলেন। ভক্ষণ করিতে করিতে তন্মধ্য হইতে অতি ক্ষুদ্র তাম্রবর্ণ কৃষ্ণনয়ন এক কৃমি নির্গত হইল। রাজা, হস্তে সেই কৃমি লইয়া অমাত্যদিগকে কহিলেন, দেখ, সূর্য অস্তগত হইতেছেন, অদ্য আর আমার বিষয় নাই। অতএব মুনিবাক্য সত্য হউক, এই কৃমি তক্ষকপ্রতিরূপ হইয়া আমাকে দংশন করুক, তাহা হইলেই শাপের পরিহার হইল। মন্ত্রীরাও কালবশীভূত হইয়া তাঁহার মতের অনুবর্তী হইলেন। মুমূর্ষু হতচেতন রাজা সেই কুমিকে গ্রীবাতে স্থাপন করিয়া হাসিতে লাগিলেন। কৃমিরূপী তক্ষক তৎক্ষণাৎ স্বরূপ প্রাপ্ত হইয়া ফণমণ্ডল দ্বারা রাজার গ্রীবা বেষ্টন পূর্ব্বক ভয়ঙ্কর গর্জ্জন করিয়া তাহাকে দংশন করিলেন।