পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আদিপর্ব্ব।
১৩

হইল। ইহাদিগের হইতেই কুরুবংশ, যদুবংশ, ভরতবংশ, যযাতিবংশ, ইক্ষাকুবংশ, ও অন্যান্য রাজর্ষি বংশের উদ্ভব হইল।

 মহর্ষি বেদব্যাস যোগবলে প্রাণীদিগের অবস্থিতি স্থান[১], ত্রিবিধ রহস্য[২], বেদ, যোগশাস্ত্র, বিজ্ঞানশাস্ত্র, ধর্ম, অর্থ, কাম, ও তৎপ্রতিপাদক বিবিধ শাস্ত্র, লোকযাত্রাবিপ্নান,[৩] এতৎ সমুদায় অবগত ছিলেন। এই ভারত গ্রন্থে ব্যাখ্যা সহিত সমস্ত ইতিহাস ও অশেযবিধ বেদার্থ যথাক্রমে কথিত হইয়াছে। লোকে কেহ কেহ সংক্ষেপে কেহ কেহ বা বাহুল্যে জানিতে বাসনা করে, এই নিমিত্ত মহর্ষি এই জ্ঞানশস্ত্রকে সংক্ষেপে ও বাহুল্যে কহিয়াছেন। কোনও কোনও ব্রাহ্মণেরা প্রথম মন্ত্র[৪] অবধি, কেহ কেহ আস্তীকপ অবধি, কেহ কেহ বা উপরিচর রাজার উপাখ্যান অবধি, এই ভারতের আরও বিবেচনা করিয়া অধ্যয়ন করেন। মনীষিগণ অশেষ প্রকারে এই পবিত্র সংহিতার ভাবার্থ প্রকাশ করিয়া থাকেন। কেহ কেহ হ্রন্থব্যাখ্যা বিষয়ে পটু, কেহ কেহ বা গ্রন্থার্থধারণা বিষয়ে নিপুণ।

 ভগবান্ সত্যবতীনন্দন, তপস্যা ও ব্রহ্মচর্য প্রভাবে সনাতন বেদশাস্ত্র বিভাগ করিয়া, তদীয় সরসঙ্কলন পূর্বক মনে মনে এই পরমাদ্ভূত পবিত্র ইতিহাস রচনা করিয়াছিলেন। রচনানন্তর


  1. গ্রাম, নগর, দুর্গ, তীর্থ, আশ্রম প্রভৃতি।
  2. ধর্ম্মরহস্য, অর্থরহস্য, কামরহস্য। রহস্য শব্দের অর্থ গূঢ়তত্ত্ব, অর্থাৎ যাহার মর্ম্ম বুঝিতে পারা যায় না।
  3. সংসারযাত্রা নির্বাহের বিধিদর্শক নীতিশাস্ত্র বিশেষ।
  4.  নারায়ণং নমস্কৃত্য নরঞ্চৈব নরোম।
    দেবী সরস্বতীঞ্চৈব ততো জয়মুদীরয়েৎ