পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একষষ্টিতম অধ্যায়—ভারতসূচনা।

বৈশম্পায়ন কহিলেন, প্রথমতঃ গুরুদেবকে ভক্তি শ্রদ্ধা সহকারে একাগ্র চিত্তে সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত করিয়া এবং সমস্ত ব্রাহ্মণগণ ও অন্যান্য বিদ্বান ব্যক্তিদিগের সম্মান ও সৎকার করিয়া, সর্ব্বলোকবিখ্যাত ধীমান্ মহর্ষি ব্যাসদেবের অশেষ মত বর্ণন করিব। মহারাজ! আপনি এই ভারতীয় কথা শ্রবণের যোগ্য পাত্র, এবং গুরুদেবের আদেশ পাইয়া আমারও এই মহতী কথার কীর্ত্তনে উৎসাহ জন্মিতেছে।

 মহারাজ! শ্রবণ করুন। রাজ্যের নিমিত্ত দ্যূতক্রীড়া দ্বারা যে রূপে কৌরব ও পাণ্ডবদিগের আত্মবিচ্ছেদ, পাণ্ডবদিগের বনবাস ও সর্ব্বসংহারকারী সংগ্রাম ঘটিয়াছিল, তাহা আমি আপনার নিকট বর্ণন করিব। যুধিষ্ঠিরাদি পঞ্চ বীর, পিতার পরলোক প্রস্থানের পর, অরণ্য হইতে আলয়ে প্রত্যাগমন করিলেন, এবং অচিরকালমধ্যেই বেদে ও ধনুর্ব্বেদে কৃতবিদ্য হইয়া উঠিলেন। কৌরবেরা পাণ্ডবদিগকে এইরূপ শ্রী, কীর্ত্তি, রূপ, বল, বীর্য্য ও ঔদার্য্য সম্পন্ন এবং পুরবাসিগণের প্রিয় দেখিয়া অত্যন্ত ঈর্ষাপরবশ হইলেন। ক্রুরস্বভাব দুর্য্যোধন, কর্ণ ও সৌবল, একমতাবলম্বী হইয়া, পাণ্ডবদিগের নানা নিগ্রহ করিতে ও তাঁহাদিগের উপর যৎপরোনাস্তি অত্যাচার করিতে আরম্ভ করিল। পাপাত্মা দুর্য্যোধন ভীমকে অন্নের সহিত বিষপান করাইয়াছিল; কিন্তু ভীম তাহা জীর্ণ করিয়াছিলেন। ভীম গঙ্গাতটে নিদ্রিত ছিলেন, দুরাত্মা দুর্য্যোধন সেই