পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আদিপর্ব্ব।
১৯

সদাচরাভ্যাসাদি যাবতীয় ব্যাপার সম্পন্ন হইল। কুন্তী ও মাদ্রী পরম পবিত্র অরণ্যে ঋষিদিগের আশ্রমে তাহাদিগের লালন পালন করিতে লাগিলেন।

 কিছু কাল পরে, ঋষিগণ সেই ব্রহ্মচারিবেশ, অশেষশাস্ত্রজ্ঞ, সর্ব্বগুসম্পন্ন রাজকুমারদিগকে রাজধানীতে ধৃতরাষ্ট্রাদ্রির নিকট আনয়ন করিলেন, এবং, ইঁহারা পাণ্ডুর পুত্র, তোমাদিগের পুত্র, ভ্রাতা, শিষ্য, ও সুহৃদ, এই বলিয়া পরিচয় দিয়া প্রস্থান করিলেন। ইহা শুনিয়া সমুদায় কৌরব ও সুশীল ধর্ম্মপরায়ণ পুরবাসিগণ কোলাহল করিতে লাগিলেন। কেহ কেহ কহিল, ইহারা তাঁহার পুত্র নহে, কেহ কেহ বলিল, তাঁহারই বটে; কেহ কেহ কহিল, বহু কাল হইল পাণ্ডুর মৃত্যু হইয়াছে, তাঁহার কি রূপে সম্ভতি হইতে পারে। অনন্তর সর্ব্বত্র এই বাক্য শ্রুত হইতে লাগিল, অদ্য আমরা ভাগ্যক্রমে পাণ্ডুর সস্ততি দেখিলাম; হে পাণ্ডবগণ! তোমরা কুশলে আসিয়াছ? তাঁহারা কহিলেন, আমরা কুশলে আসিয়াছি। অনন্তর কোলাহল নিবৃত্ত হইলে, মহাশব্দে আকাশবাণী হইল, এবং পুষ্পবৃষ্টি, সৌরভসঞ্চার, ও শঙ্খদুন্দুভিধ্বনি হইতে লাগিল। পাণ্ডুপুত্রেরা নগর প্রবেশ করিলে এই সকল অদ্ভুত ব্যাপার ঘটিয়াছিল। উক্ত সমস্ত ব্যাপার দর্শনে হর্ষ প্রাপ্ত হইয়া পৌরগণ আহ্লাদে কোলাহল করিতে লাগিল।

 পাণ্ডবেরা নিখিল বেদ ও বিবিধ শাস্ত্র অধ্যয়ন করিয়া পরমাদরে ও অকুতোভয়ে বাস করিতে লাগিলেন। সমুদায় লোক যুধিষ্ঠিরের সদাচার, ভীমের ধৈর্য্য, অর্জ্জুনের বিক্রম, এবং নকুল সহদেবের গুরুভক্তি, ক্ষমা, ও বিনয় দর্শনে পরম পরিতোষ প্রাপ্ত হইয়াছিল। অনন্তর অর্জ্জুন সমাগত রাজগণ