করিলেন, দ্যূত প্রভৃতি অশেষবিধ কুনীতিও সহ্য করিলেন। কারণ বিদুর, ভীষ্ম, দ্রোণ, ও কৃপাচার্য্যের অনভিমতে আরব্ধ সেই তুমুল যুদ্ধে ক্ষত্রিয়কুলধ্বংস হওয়া তাঁহার অভিপ্রেত ছিল।
ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডবদিগের জয়রূপ অপ্রিয় সংবাদ শ্রবণ এবং দুর্য্যোধন, কর্ণ, ও শকুনির প্রতিজ্ঞা[১] স্মরণ করিয়া বহু ক্ষণ চিন্তা পূর্ব্বক সঞ্জয়কে কহিলেন, সঞ্জয়! আমি তোমায় সমুদায় কহিতেছি, শ্রবণ কর; কিন্তু শুনিয়া আমারে অপ্রাজ্ঞ বিবেচনা করিও না। তুমি শাস্ত্রজ্ঞ, মেধাবী, বুদ্ধিমান, ও পরম প্রাজ্ঞ। আমি বিবাদেও সম্মত ছিলাম না, এবং কুলক্ষয়দর্শনেও প্রীত হই নাই। আমার স্বপুত্র ও পাণ্ডুপুত্রে বিশেষ ছিল না। পুত্রেরা সদা ক্রোধপরায়ণ, আমারে বৃদ্ধ বলিয়া অবজ্ঞা করিত; আমি অন্ধ, লঘুচিত্ততা প্রযুক্ত পুত্রস্নেহে সকলই সহ্য করিতাম; অচেতন দুর্য্যোধন মোহাভিভূত হইলে আমিও মোহাভিভূত হইতাম। সে রাজসূয় যজ্ঞে মহানুভাব যুধিষ্ঠিরের সমৃদ্ধি দেখিয়া, এবং সভাপ্রবেশকালে সেই রূপে উপহসিত হইয়া, অবমানিত বোধে ক্রোধে অন্ধ হইল; এবং ক্ষত্রিয়কুলে জন্ম গ্রহণ করিয়াও, যুদ্ধে পাণ্ডবদিগকে জয় করিতে অশক্ত ও রাজলক্ষ্মী আত্মসাৎ করিবার বিষয়ে হতোৎসাহ হইয়া, গান্ধাররাজের সহিত পরামর্শ করিয়া কপট দ্যুতক্রীড়ার মন্ত্রণা করিল। এই সকল বিষয়ে আমি আদ্যোপান্ত যাহা অবগত আছি, কহিতেছি শুন। তুমি আমার বুদ্ধিযুক্ত বাক্য সকল শ্রবণ করিয়া আমারে প্রজ্ঞাবান্ বলিয়া জানিতে পারিবে।
- ↑ জয়ই হউক অথবা মৃত্যুই হউক, পাণ্ডবদিগকে রাজ্যার্দ্ধপ্রদান করিব না!