শুনিলাম, দ্রোণবধানন্তর অশ্বত্থামা নারায়ণাস্ত্র প্রয়োগ করিয়াও পাণ্ডবদিগের প্রাণবধ করিতে পারেন নাই, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, ভীমসেন যুদ্ধে দুঃশাসনের শোণিত পান করিয়াছে, দুর্য্যোধন প্রভৃতি কেহ তাহার নিবারণ করিতে পারে নাই, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, অর্জ্জুন অতি দুর্দ্ধর্ষ পরাক্রান্ত কর্ণের প্রাণসংহার করিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, যুধিষ্ঠির পরাক্রান্ত অশ্বত্থামা, দুঃশাসন, ও কৃতবর্মাকে পরাজিত করিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, যে শল্য সংগ্রামে কৃষ্ণকে পরাজিত করিব বলিয়া স্পর্ধা করিত, যুধিষ্ঠির সেই পরাক্রান্ত পুরুষের প্রাণসংহার করিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, সহদেব বিবাদ ও দ্যূতক্রীড়ার মূল মায়াবী পাপিষ্ঠ শকুনির প্রাণবধ করিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, দুর্য্যোধন হতসৈন্য ও নিঃসহায় হইয়া জলস্তম্ভ করিয়া একাকী হ্রদপ্রবেশ করিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, পাণ্ডবেরা বাসুদেব সমভিব্যাহারে সেই হ্রদের তীরে দণ্ডায়মান হইয়া অসহন দুর্য্যোধনের তিরস্কার করিতেছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। শুনিলাম, দুর্য্যোধন গদাযুদ্ধে অশেষ কৌশল প্রদর্শন পূর্ব্বক পরিভ্রমণ করিতেছিল, ভীম কৃষ্ণের পরামর্শে কপট প্রহার দ্বারা তাহার ঊরুভঙ্গ করিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, অশ্বথামা প্রভৃতি সকলে পরামর্শ করিয়া দ্রৌপদীর নিদ্রিত পুত্রপঞ্চকের বধরূপ অতি ঘৃণিত কলঙ্ককর
পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
মহাভারত।