পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
মহাভারত।

এই বিষয়ে পবিত্র উপনিষৎ কীর্ত্তন করিয়াছেন, এবং বিদ্বান্ সৎকবিগণ পুরাণে সেই উপনিষৎ কীর্ত্তন করিয়া থাকেন।

 ভারত অধ্যয়নে পুণ্য জন্মে। অধিক কি কহিব, শ্রদ্ধা পূর্ব্বক শ্লোকের এক চরণ মাত্র পাঠ করিলেও সকল পাপ নষ্ট হয়। এই গ্রন্থে দেব, দেবর্ষি, ব্রহ্মর্ষি, যক্ষ, উরগ প্রভৃতির ও সনাতন ভগবান্ বাসুদেবের কীর্ত্তন আছে। তিনি সত্য, পবিত্র, মঙ্গলপ্রদ, পরিচ্ছেদাতীত, কালত্রয়ে অবিকৃত, জ্যোতির্ম্ময়, ও সনাতল; পণ্ডিতেরা তাঁহার অলৌকিক কর্ম্ম সকল কীর্ত্তন করিয়া থাকেন, তিনি এই কার্য্য কারণ রূপ বিশ্বের সৃষ্টিকর্ত্তা, তিনি ব্রহ্মাদি দেবতার ও যজ্ঞাদি কার্য্যের সৃষ্টি করেন, তিনি জন্ম মৃত্যু ও পুনর্জন্মের কারণ, তিনি পাঞ্চভৌতিক দেহের অধিষ্ঠাতা জীব ও নির্বিশেষ পরব্রহ্ম স্বরূপ। যতিগণ সমাহিত হইয়া ধ্যান ও যোগবলে দর্পণতলগত প্রতিবিম্বের ন্যায় তাঁহাকে হৃদয়ে দর্শন করেন।

 ধর্মপরায়ণ নর শ্রদ্ধা ও নিয়ম পূর্ব্বক এই অধ্যায় পাঠ করিয়া পাপ হইতে মুক্ত হয়। আস্তিক ব্যক্তি ভারতের এই অনুক্রমণিকাধ্যায় প্রথমাবধি সর্ব্বদা শ্রবণ করিলে বিপদে পতিত হয় না। দুই সন্ধ্যা অনুক্রমণিকার কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ পাঠ করিলে, তৎক্ষণাৎ অহোরাত্র সঞ্চিত সমুদায় পাপ হইতে মুক্ত হয়। এই অধ্যায় ভারতের শরীর স্বরূপ, ইহাতে সত্য ও অমৃত উভয় আছে। যেমন গব্যের মধ্যে নবনীত, দ্বিপদের মধ্যে ব্রাহ্মণ, বেদের মধ্যে আরণ্যক, ওষধির মধ্যে অমৃত, জলাশয়ের মধ্যে সমুদ্র, চতুষ্পদের মধ্যে ধেনু, সেইরূপ মহাভারত সমস্ত ইতিহাসের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি শ্রাদ্ধকালে ব্রাহ্মণদিগকে অন্ততঃ ভারতীয় শ্লোকের এক চরণ শ্রবণ করায়, তাহার পিতৃলোকের অক্ষয়