পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আদিপর্ব্ব।
৩৩

তৃপ্তি হয়। ইতিহাস ও পুরাণ দ্বারা বেদের অর্থ সমর্থন করিবেক। বেদ অল্পজ্ঞের নিকট এই ভয় করেন যে, এ আমাকে প্রহার করিবেক। বিদ্বান ব্যক্তি কৃষ্ণদ্বৈপায়নপ্রোক্ত এই বেদ শ্রবণ করাইয়া অর্থলাভ করেন, এবং নিঃসন্দেহ ভ্রূণহত্যাদি পাপ হইতে মুক্ত হন। যে ব্যক্তি শুচি ও সংযত হইয়া পর্ব্বে পর্ব্বে এই পরমপবিত্র অধ্যায় পাঠ করে, আমার মতে, তাহার সমুদায় ভারত অধ্যয়ন করা হয়। যে নর প্রতিদিন শ্রদ্ধাবান্ হইয়া এই ঋষিপ্রণীত শাস্ত্র শ্রবণ করে, তাহার দীর্ঘ আয়ুঃ, কীর্ত্তি, ও স্বর্গ লাভ হয়।

 পূর্ব্ব কালে সমুদয় দেবত। একত্র হইয়া তুলাযন্ত্রের এক দিকে চারি বেদ ও অপর দিকে এই ভারত স্থাপন করিয়াছিলেন। ভারত সরহস্য বেদচতুষ্টয় অপেক্ষা ভারে অধিক হয়, এজন্য তদবধি ইহ লোকে ভারত মহাভারত বলিয়া প্রসিদ্ধ হইয়াছে। পরিমাণকালে ইহার মহত্ত্ব ও ভারবত্ত্ব উভয়ই অধিক হইল, সেই নিমিত্ত ইহার নাম মহাভারত। যে ব্যক্তি মহাভারত শব্দের ব্যুৎপত্তি জানে, সে সর্ব্বপাপ হইতে মুক্ত হয়।

 তপস্যা পাপজনক নহে, বেদাধ্যয়ন পাপজনক নহে, বর্ণাশ্রমাদিনিয়মিত বেদবিহিত কর্ম্মানুষ্ঠান পাপজনক নহে, অশেষ ক্লেশ স্বীকার পূর্ব্বক জীবিকা নির্ব্বাহ করা পাপজনক নহে; এই সমস্ত অসদভিপ্রায়দূষিত হইলেই পাপজনক হয়।