পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পর্ব্বসংগ্রহ।
৩৫

 সেই পঞ্চ রুধিরহ্রদের অদূরে যে পরম পবিত্র দেশ আছে, তাহাকে সমন্তপঞ্চক কহে। পণ্ডিতেরা কহেন, যে দেশ যে চিহ্ণে চিহ্নিত, তদ্দারাই সে দেশের নাম নির্দ্দেশ হওয়া উচিত। কলি ও দ্বাপরের অন্তরে সমন্তপঞ্চকে কুরু পাণ্ডব সৈন্যের যুদ্ধ হইয়াছিল। অষ্টাদশ অক্ষৌহিণী সেনা যুদ্ধবাসনায় সেই ভূদোষ[১] বর্জ্জিত ক্ষেত্রে সমাগত ও নিধন প্রাপ্ত হয়। হে ব্রাহ্মণগণ! সেই দেশের নামের এই ব্যুৎপত্তি? সে দেশ পবিত্র ও রমণীয়। হে ব্রতপরায়ণ মহর্ষিগণ! উক্ত দেশ ত্রিলোকে যে রূপে বিখ্যাত, তৎসমুদায় নিবেদন করিলাম।

 ঋষিগণ কহিলেন, হে সূতনন্দন! তুমি যে অক্ষৌহিণী শব্দ প্রয়োগ করিলে আমরা তাহার যথার্থ অর্থ শ্রবণের বাসনা করি। তোমার অবিদিত কিছুই নাই, অতএব কত পদাতি, কত অশ্ব, কত রথ, ও কত গজে এক অক্ষৌহিণী হয়, তাহার সবিশেষ বর্ণনা কর। উগ্রশ্রবাঃ কহিলেন, এক রথ, এক গজ, পাঁচ পদাতি, তিন অশ্ব, ইহাতে এক পত্তি হয়, তিন পত্তিতে এক সেনামুখ, তিন সেনামুখে এক গুল্ম, তিন গুল্মে এক গণ, তিন গণে এক বাহিনী, তিন বাহিনীতে এক পৃতনা, তিন পৃতনাতে এক চমূ, তিন চমূতে এক অনীকিনী, আর দশ অনীকিনীতে এক অক্ষৌহিণী হয়। সমুদায়ে এক অক্ষৌহিণীতে ২১৮৭০ এক বিংশতি সহস্র অষ্টশত সপ্ততি সংখ্যক রথ, তাবৎ সংখ্যক গজ, ১০৯৩৫০ এক লক্ষ নয় সহস্র তিন শত পঞ্চাশ পদাতি, আর ৬৫৬১০ পঞ্চশটি সহস্র ছয় শত দশ অশ্ব থাকে। আমি আপনাদিগকে যে অক্ষৌহিণীর কথা কহিয়াছিলাম,


  1. হিংসা স্তেয় মিথ্যা প্রতারণা প্রভৃতি।