পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
মহাভারত।

আকাশ পর্যন্ত রোধ করিয়া তথায় অবস্থিত আছে। অশ্বত্থামা যত অস্ত্র প্রয়োগ করিলেন, রাক্ষস সমুদায় ব্যর্থ করিল। তখন তিনি সন্বর মহাদেবের আরাধনা করিয়া কৃতবর্মা ও কৃপাচার্যের সহযোগে নিদ্রাগত ধৃষ্টদ্যুম্ন প্রভৃতি পাঞ্চাল ও দ্রৌপদীনন্দনদিগের প্রাণবধ করিলেন। কৃষ্ণের বলাশ্রয় প্রভাবে কেবল পঞ্চ পাণ্ডব ও সাত্যকি রক্ষা পাইলেন; অবশিষ্ট সকলেই নিধন প্রাপ্ত হইল। ধৃষ্টদ্যুম্নের সারথি পাণ্ডবদিগকে সংবাদ 'দিল, অশ্বত্থামা নিদ্রাভিভূত পাঞ্চালদিগের প্রাণবধ করিয়াছে। দ্রৌপদী পুত্রশোকে আর্ত্তা ও পিতৃ ভ্রাতৃ বধ শ্রবণে কাতরা হইয়। অনশন সংকল্প করিয়া ভক্তগণসন্নিধানে উপবিষ্ট হইলেন। মহাপরাক্রান্ত বীর্যবান্ ভীমসেন দ্রৌপদীর মনস্তুষ্টি সম্পাদনার্থে তদীয় বচনানুসারে গদাগ্রহণ পূর্বক কুপিত চিত্তে গুরুপুত্রের পশ্চাৎ ধাবমান হইলেন। অশ্বত্থামা ভীমভয়ে অভিভূত, কোষপরবশ ও দৈবপ্রেরিত হইয়া, পৃথিবী অপাণ্ডব হউক, এই বলিয়া অস্ত্র ত্যাগ করিলেন। কৃষ্ণ, এরূপ করিও না, বলিয়া অশ্বত্থামাকে নিষেধ করিলেন। পাপমতি অশ্বথামার অনিষ্টীচরণে এইরূপ অভিনিবেশ দেখিয় অর্জ্জুন অস্ত্র দ্বারা সেই অস্ত্রের নিবারণ করিলেন। অশ্বথামা দ্বৈপায়ন প্রভৃতি পরস্পর শপ প্রদান করিলেন। পাণ্ডবের। মহারথ দ্রোণপুত্রের নিকট হইতে মণিগ্রহণ করিয়া হৃষ্ট চিত্তে দ্রৌপদীহস্তে সমর্পিলেন। সৌপ্তিকনামক দশম পর্ব উদাহৃত হইল। উত্তমভেজা ব্রহ্মবাদী মহাত্মা মুনি সৌপ্তিকপর্বে ষ্টাদশ অধ্যায় ও অষ্ট শত সপ্ততি শ্লোক সংখ্যা করিয়াছেন। ঐষীকপ এই পর্বের অন্তর্গত।

 অতঃপর করুণরসোদ্বোধক স্ত্রীপর্ব্ব আরব্ধ হইতেছে। এই পর্বে পুত্রশোকসন্তপ্ত প্রজ্ঞাচক্ষুঃ রাজা ধৃতরাষ্ট্র মনে মনে ভীম-