পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পর্ব্বসংগ্রহ
৫৩

সেনের প্রাণবধ সংকল্প করিয়া কৃষ্ণানীত লৌহময়ী ভীমপ্রতিমূর্তি ভগ্ন করেন। বিদুর অধ্যাত্ববিদ্যাসম্বদ্ধ হেতুবাদ দ্বারা শোকাভিভূত ধীমান্ ধৃতরাষ্ট্রের সাংসারিক মায়া মোহ নিরাকরণ ও তাহাকে আশ্বাস প্রদান করেন। শোকার্ত্ত ধৃতরাষ্ট্র অন্তঃপুরিকাগণের সহিত রণক্ষেত্র দর্শনার্থ গমন করেন। বীরপত্নীদিগের অতি করুণ বিলাপ এবং গান্ধারী ও ধৃতরাষ্ট্রের কোপাবেশ ও মোহ। ক্ষত্রিয়নারীগণ যুদ্ধে অপরায়ুখ পঞ্চত্বপ্রাপ্ত পিতা ভ্রাতা ও পুদিগকে দেখিতে লাগিলেন। কৃষ্ণ পুত্রপৌত্রশোককাতরা গান্ধারীর কোপ শান্তি করিলেন। পরমধার্ম্মিক মহাপ্রাজ্ঞ রাজা যুধিষ্ঠির যথাশাস্ত্র রাজাদিগের শরীরদাহ করাইলেন। প্রেততপণ আরব্ধ হইলে কুন্তী কর্ণকে স্বীয় গৃঢ়ৎপন্ন পুত্র বলিয়া অঙ্গীকার ও প্রকাশ করিলেন। মহর্ষি ব্যাস এই একাদশ পর্ব্ব রচনা করিয়াছেন। এই পর্ব শ্রবণ ও অধ্যয়ন করিলে সজ্জনদিগকে শোকে অভিভূত ও অশ্রুজলে আকুলিত হইতে হয়। ধীমান্ ব্যাসদেব স্ত্রীপর্ব্ব সপ্তবিংশতি অধ্যায় ও সপ্ত শত পঞ্চ সপ্ততি শ্লোক কীর্ত্তন করিয়াছেন।

 অতঃপর শান্তিপর্ব্ব; ইহার অধ্যয়নে বুদ্ধিবৃদ্ধি হয়। ধর্ম্মরাজ যুধিষ্ঠির পিতৃ ভ্রাতৃ পুত্র মাতুল প্রভৃতির সংহার করাইয়া যৎপরোনাস্তি নিৰ্বেদ প্রাপ্ত হয়েন। শরশয্যারূঢ় ভীষ্মদেব রাজা যুধিষ্ঠিরকে রাজধর্ম্ম শ্রবণ করান। ঐ সমুদায় ধর্মজ্ঞানাভিলাষী রাজগণের অবশ্যজ্ঞেয়। ভীষ্মদেব কাল ও কারণ প্রদর্শন পূর্ব্বক আপদ্ধর্ম্ম কীর্ত্তন করেন। ঐ সকল ধর্ম্ম অবগত হইলে নর সর্বজ্ঞ প্রাপ্ত হয়। অনন্তর বিচিত্র মোক্ষধর্ম্মও সবিস্তর ব্যাখ্যাত হইয়াছে। প্রাজ্ঞজনপ্রীতিপ্রদ দ্বাদশ পর্ব নির্দিষ্ট হইল। হে তপোবনগণ! শান্তিপর্বে ত্রিশত উনচত্বারিংশৎ