পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পর্ব্বসংগ্রহ
৫৫

পরায়ণা কুন্তী তাঁহাকে প্রস্থান করিতে দেখিয়া পুত্ররাজ্য পরিত্যাগ পূর্বক তদনুগামিনী হইলেন। রাজা ধৃতরাষ্ট্র যুদ্ধহত লোকান্তরগত পুত্র পৌত্রগণ ও অন্যান্য পার্থিবদিগকে জীবিত পুনরাগত অবলোকন করিলেন। তিনি মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের প্রসাদাৎ এইরূপ অত্যুৎকৃষ্ণ আশ্চর্য সন্দর্শন করিয়া শোক পরিত্যাগ পূর্বক সস্ত্রীক পরম সিদ্ধি প্রাপ্ত হইলেন। বিদুর ও মহামাত্য বিদ্বান্ জিতেন্দ্রিয় সঞ্জয় ধর্ম্মপথ আশ্রয় করিয়া সদগতি পাইলেন। ধর্ম্মরাজ যুধিষ্ঠির নারদের সন্দর্শন পাইয়া তাহার প্রমুখাৎ যদুবংশীয়দিগের কুলক্ষয়বার্তা শ্রবণ করিলেন। অত্যদ্ভুত আশ্রমবাসখ্য পর্ব উক্ত হইল। তত্ত্বদর্শী ব্যাস এই পর্বে দ্বিচত্বারিংশৎ অধ্যায় ও এক সহস্র পাঁচ শত ছয় শ্লোক গণনা করিয়াছেন।

 হে মহর্ষিগণ! অতঃপর অতি দারুণ মৌষলপব জানিবেন। এই পর্বে ব্রহ্মপনিগৃহীত পুরুষশ্রেষ্ঠ যাদবেরা আপানে[১] সুরাপানে মত্ত ও দৈবপ্রেরিত হইয়া এরকারূপী[২] বজ্র দ্বারা পরস্পর প্রহার করেন। রাম ও কেশব কুলক্ষয় করিয়া পরিশেষে উভয়ে সর্ব্বসংহারকারী উপস্থিত কালাকে অতিক্রম করিলেন না। 'নরশ্রেষ্ঠ অর্জ্জুন আসিয়া দ্বারকা যাদৰশূন্য নিরীক্ষণ করিয়া যৎপরোনাস্তি বিষাদ ও মনঃপীড়া প্রাপ্ত হইলেন। তিনি আত্মমাতুল নরশ্রেষ্ঠ বসুদেবের সংস্কার করিয়া কৃষ্ণ, বলরাম, ও অন্যান্য প্রধান প্রধান যাদবদিগের ও সংস্কার করিলেন। অনন্তর দ্বারকা হইতে বালক ও বৃদ্ধদিগকে সমভিব্যাহারে


  1. যে স্থানে উপবিষ্ট হইয়া সুরাপন করে।
  2. এরা তৃণবিশেষ, খড়ী।