পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
মহাভারত।

যুদ্ধাভিলাষে অষ্টাদশ অক্ষৌহিণী একত্র সমাগত হইয়াছিল। অষ্টাদশ দিবস ঐ মহাদারুণ যুদ্ধ হয়।

 যে দ্বিজ অঙ্গ[১] ও উপনিষদ্ সহিত চারি বেদ জানেন, কিন্তু এই আখ্যান গ্রন্থ জানেন না, তিনি কখনই বিচক্ষণ নহেন। অমিতবুদ্ধি ব্যাসদেব এই গ্রন্থকে অর্থশাস্ত্র, ধর্ম্মশাস্ত্র, ও কামশাস্ত্র স্বরূপ নির্দেশ করিয়াছেন। যেমন পুংস্কোকিলের কলরব শ্রবণ করিয়া কর্কশ কাশব্দ শ্রবণে অনুরাগ হয় না, সেইরূপ এই উপাখ্যান শ্রবণ করিয়া শাস্ত্রান্তর শ্রবণে অভিরুচি থাকে না। যেমন পঞ্চভূত হইতে ত্রিবিধ লোকসৃষ্টি নিষ্পন্ন হয়, সেইরূপ এই সর্বোত্তম ইতিহাস গ্রন্থ হইতে কবিগণের বুদ্ধি উৎপন্ন হয়। যেমন চতুর্ব্বিধ[২] প্রজা অন্তরীক্ষের অন্তর্গত, হে দ্বিজগণ সেইরূপ যাবতীয় পুরাণ এই উপাখ্যানের অন্তর্বর্তী। যেমন মনের ক্রিয়া সমস্ত ইন্দ্রিয়ের আশ্রয়, সেইরূপ এই আখ্যান শাস্ত্র অশেষবিধ ক্রিয়া[৩] ও গুণের[৪] আশ্রয়। যেমন হার ব্যতিরেকে শরীরধারণের অন্য উপায় নাই, সেইরূপ এই উপাখ্যানের অন্তর্গত কথা ব্যতিরিক্ত ভূমণ্ডলে আর কথা নাই। যেমন অভুয়াকাঙক্ষী ভূতেরা সৎকুলজাত প্রভুর সেবা করিয়া থাকে, সেইরূপ, সমস্ত


  1. শিক্ষা, কল্প, নিরু, ব্যাকরণ, জ্যোতিষ, ছন্দঃ, এই ছয়, বেদের উচ্চারণনিয়মবোধক শাস্ত্রের নাম শিক্ষা, যে শাস্ত্রে বৈদিক ক্রিয়ার বিবরণ আছে, 'তাহাকে কল্প কহে, আর বেদান্ত দুরূহ শব্দের ব্যাখাকারক শাস্ত্রের নাম নিরুক্ত।
  2. জরায়ুজ, অগুন্স, স্বেদজ, উদ্ভিজ্জ।
  3. অধ্যয়ন, দান, যজন প্রভৃতি।
  4. শম, দম, ধৈর্য, ক্ষমা, সত্য প্রভৃতি।