পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পৌষ্যপর্ব্ব।
৬৩

কি করিব, আজ্ঞা করুন। শিষবাক্যাবসানে উপাধ্যায় তদীয় গুরুভক্তির দৃঢ়তা দর্শনে প্রসন্ন হইয়া কহিলেন, বৎস! তুমি কেদারখণ্ডের আলি বিদীর্ণ করিয়া উত্থান করিয়াছ, অতএব তুমি অদ্যাবধি উদ্দালক নামে প্রসিদ্ধ হইবে; আর আমার বাক্য প্রতিপালন করিয়াছ, এই নিমিত্ত তোমার মঙ্গল হইবেক, বেদ ও সমুদায় ধর্মশাস্ত্র সর্ব্ব কাল স্মরণপথারূঢ় থাকিবেক। আরুণি এইরূপ উপাধ্যায়ৰাক্য শ্রবণে সন্তুষ্ট হইয়া অভিলষিত দেশে প্রস্থান করিলেন।

 আয়োদধৌম্যের উপমনু নামে আর এক শিষ্য ছিলেন। উপাধ্যায় তাঁহাকে, বৎস উপমনু! তুমি গো রক্ষা কর, এই আদেশ দিয়া গোচারণে প্রেরণ করিলেন। তিনি উপাধ্যায়বচনানুসারে গো রক্ষা করিতে লাগিলেন। উপমন্যু দিবাভাগে গো রক্ষা করিয়া সায়াহে গুরুগৃহে প্রত্যাগমন পূর্বক উপাধ্যায়ের সম্মুখে অবস্থিত হইয়া প্রণাম করিলেন। উপাধ্যায় তাহাকে স্কুলকলের অবলোকন করিয়া জিজ্ঞাসিলেন, বৎস উপমন্যু। তোমাকে বিলক্ষণ স্থূলকায় দেখিতেছি, তুমি কি আহার করিয়া পাক? তিনি উত্তর করিলেন, ভগব! ভিক্ষালব্ধ অন্ন দ্বারা উদরপূর্তি করি। উপাধ্যায় কহিলেন, অতঃপর আমাকে না জানাইয়া ভিক্ষান্ন ভক্ষণ করিবে না। উপমনু এইরূপ আদিষ্ট হইয়া সংগৃহীত ভিক্ষান্ন অনিয়া উপাধ্যায়ের নিকট সমর্পণ করিলেন। উপাধ্যায় সমস্ত ভিক্ষান্ন স্বয়ং গ্রহণ করিলেন। পর দিন উপমনু দিবাভাগে গো রক্ষা করিয়া প্রদোষকালে গুরুকুল প্রত্যাগমন পূর্বক গুরুর পুরোভাগে অবস্থিত হইয়া প্রণাম করিলেন। উপাধ্যায় এক্ষণেও তাহাকে স্থূলকায় দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, বৎস উপমনু! আমি তোমার সমুদায় ভিক্ষা গ্রহণ করি,