পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
মহাভারত।

অশ্বিনীতনয়েরা যেরূপ কহিয়াছেন, তুমি সেইরূপ সকল মঙ্গল প্রাপ্ত হইবে, সকল বেদ ও সমুদায় ধর্মশাস্ত্র সর্ব্ব কাল তোমার স্মরণপথারূঢ় থাকিবেক। উপমন্যুর এই পরীক্ষা হইল।

 আহোদধৌম্যের বেদ নামে আর এক শিষ্য ছিলেন। উপাধ্যায় তাহাকে এই আদেশ করিলেন, বৎস বেদ! আমার গৃহে থাকিয়া কিছু কাল শুশ্রুষা কর, তোমার মঙ্গল হইবে। তিনি যে আজ্ঞা বলিয়া গুরু শুশ্রুষাতৎপর হইয়া দীর্ঘ কাল গুরুগৃহে অবস্থিতি করিলেন। গুরু তাঁহাকে সর্বদাই কর্ম্মের ভার দিতেন। তিনি শীত, উষ্ণ, ক্ষুধা, তৃষ্ণা জনিত সমস্ত ক্লেশ সহিতেন এবং আদেশ পাইলে তৎক্ষণাৎ তাহা সম্পাদন করিতেন, কখনও কোনও বিষয়ে অনিচ্ছা বা অসন্তোষ প্রকাশ করিতেন না। বহু কালের পর গুরু তাহার প্রতি প্রসন্ন হইলেন। তদীয় প্রসাদে বেদ, শ্রেয়ঃ, ও সর্বজ্ঞতা লাভ করিলেন। বেদেরও এই পরীক্ষা হইল।

 বেদ উপাধ্যায়ের অনুজ্ঞা লাভ করিয়া গুরুকুল হইতে প্রত্যাগমন পূর্বক গৃহস্থাশ্রমে প্রবেশ করিলেন। তাঁহারও গৃহাবস্থান কালে তিন শিষ্য হইল। তিনি শিষদিগকে গুরুশুশ্রষা বা কোন কর্ম্ম করিতে কহিতেন না। স্বয়ং গুরুকুলবাসের দুঃখাভিজ্ঞ ছিলেন, এজন্য শিদিগকে কখনও কোনও প্রকার ক্লেশ দিতে চাহিতেন না।

 কিয়ৎ কাল পরে রাজা জনমেজয় ও পৌষ বেদের নিকটে আসিয়া তাঁহাকে উপাধ্যায়ের কার্যে বরণ করিলেন। তিনি যাজনকার্ষ্যোপলক্ষে প্রস্থান কালে উতঙ্ক নামক শিষ্যকে আদেশ করিলেন, বৎস! আমার অনুপস্থিতি কালে গৃহে যে কোনও বিষয়ের অসংস্থান হইবেক, তুমি তাহা সম্পন্ন করিবে। বেদ