পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পৌষ্যপর্ব্ব।
৭১

উতঙ্ককে এইরূপ আদেশ দিয়া প্রবাসে প্রস্থান করিলেন। উতঙ্ক গুরুগৃহে থাকিয়া শুরুর আজ্ঞা প্রতিপালন করিতে লাগিলেন।

 এক দিবস উপাধ্যায়পত্নীরা একত্র হইয়া উতস্ককে আহ্বান পূর্ব্বক কহিলেন, তোমার উপাধ্যায়নী ঋতুমতী হইয়াছেন, উপাধ্যায় গৃহে নাই; এক্ষণে যাহাতে উহার ঋতু নিষ্ফল না হয়, তাহা কর; কাল অতীত হইতেছে। উতঙ্ক তাঁহাদের কথা শুনিয়া কহিলেন, আমি স্ত্রীলোকের কথায় কুকর্মে প্রবৃত্ত হইব না, গুরু আমাকে এরূপ আদেশ করেন নাই যে, তুমি কুকর্ম্মও করিবে। কিয়ৎ কাল পরে উপাধ্যায় প্রবাস হইতে গৃহপ্রত্যাগমন পূর্বক এই সমস্ত বৃত্তান্ত অবগত হইয়া উতঙ্কের প্রতি প্রীত ও প্রসন্ন হইলেন এবং কহিলেন, বৎস উতঙ্ক? তোমার কি অভীষ্টসম্পাদন করিব বল, তুমি ধর্ম্মতঃ আমার শুশ্রুষা করিয়াছি, তাহাতে আমাদের পরস্পর প্রীতি বৃদ্ধি হইল; এক্ষণে আমি তোমাকে গৃহগমনের অনুজ্ঞা করিতেছি, তোমার সমস্ত অভীষ্ট সিদ্ধি হইবেক, প্রস্থান কর।

 এইরূপ গুরুবাক্য শ্রবণ করিয়া উতঙ্ক নিবেদন করিলেন, আপনকার কি প্রিয়সম্পাদন করিব, আজ্ঞা করুন। এরূপ আপ্তশ্রুতি আছে, যে ব্যক্তি দক্ষিণা গ্রহণ না করিয়া অধ্যাপনা করেন, এবং যে ব্যক্তি দক্ষিণা না দিয়া অধ্যয়ন করেন, তাহাদিগের অন্যতরের মৃত্যু হয়, অথবা পরস্পর বিদ্বেষ জন্মে। অতএব আপনার অনুজ্ঞা লইয়া অভিমত গুরুদক্ষিণা আহরণের বাসনা করি। এইরূপ অভিহিত হইয়া উপাধ্যায় কহিলেন, বৎস উতঙ্ক! অপেক্ষা কর, বলিব। কিয়দিন পরে উতঙ্ক উপাধ্যায়ের নিকট নিবেদন করিলেন, মহাশয় আজ্ঞা করুন,