পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
মহাভারত।

প্রবিষ্ট[১] জল দ্বারা বারদ্বয় আচমন ও বারদ্বয় ইন্দ্রিয় মার্জন ও পুনর্বার আচমন করিয়া অন্তঃপুরে প্রবেশ করিলেন, তখন রাজমহিষীকে দেখিতে পাইলেন। পৌষপত্নী দর্শনমাত্র গাত্রোঙ্খান, অভিবাদন, ও স্বাগত জিজ্ঞাসা করিয়া কহিলেন, ভগবন্! আজ্ঞা করুন কি করিব। উতঙ্ক কহিলেন, গুরুদক্ষিণার্থে কুণ্ডল ভিক্ষা করিতে আসিয়াছি, তাহা দান কর। তিনি তাঁহার দ্রীয়সী গুরুভক্তি দর্শনে প্রসন্না ও প্রীত হইলেন, এবং ইনি অতি সৎপাত্র, ইহার অভ্যর্থনা ভঙ্গ হওয়া উচিত নহে, এই বিবেচনা করিয়া কর্ণ হইতে অবমোচন পূর্বক তদীয় হস্তে কুণ্ডলদ্বয় সমর্পণ করিয়া কহিলেন, নাগরাজ তক্ষক এই কুণ্ডলের নিমিত্ত অত্যন্ত লোলুপ হইয় আছেন; অতএব আপনি সাবধান হইয়া লইয়া যাইবেন। উতঙ্ক কহিলেন, তোমার কোন উদ্বেগ নাই, নাগরাজ তক্ষক আমাকে অভিভব করিতে পারিবেন না।

 উতঙ্ক ইহা কহিয়া সমুচিত আমন্ত্রণ পূর্ব্বক রাজপত্নীর নিকট বিদায় লইয়া পৌষসকাশে উপস্থিত হইলেন এবং কহিলেন, মহারাজ। আমি পৱম পরিতুষ্ট হইয়াছি। অনন্তর পৌষ উতঙ্কের


  1. মনু কহেন, যে জলে বুদ্ধদশব্দ ও ফেন সম্বন্ধ না থাকে ও যাহা উষ্ণ না হয়, তাহাতেই আচমন করিবেক। আর আচমন জল হৃদয়পর্যন্ত গমন করিলে ব্রাহ্মণ পবিত্র হয়েন। যথা

    অনুষ্ণাভিরফেনাভিরদ্ভিস্তীর্থেন ধর্ম্মবিৎ।
    শৌচেপৃসুঃ সর্ব্বদাচামেদেকান্তে প্রাগুদন্মুখ। ২। ৬১।
    হৃদভিঃ পুয়তে বিপ্রঃ কণ্ঠগাভিশ্চ ভুমিপঃ।
    বৈশ্যোহপ্তি প্রাশিকাভিস্তু শূদ্রঃ স্পৃষ্টাভিরন্ততঃ। ২। ৬২।