পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
মহাভারত।

অতএব জাতিস্বভাবসিদ্ধ তীক্ষহৃদয়তা প্রযুক্ত আমি মযথা করিতে পারি না। তখন উতঙ্ক কহিলেন, তুমি অন্নের অশুচি প্রত্যক্ষ করিয়া আমার অনুনয় করিলে। পূর্ব্বের কহিয়াছিলে, নির্দ্দোষ অন্নকে দূষিত কহিতেছ, অতএব নির্ব্বংশ হইবে, কিন্তু অন্ন যখন দোষসংযুক্ত প্রমাণ হইল, তখন আর আমাকে শাপ লাগিবেক না। এক্ষণে আমি চলিলাম। এই বলিয়া কুণ্ডল লইয়া উতঙ্ক প্রস্থান করিলেন।

 উতঙ্ক পথিমধ্যে অবলোকন করিলেন, এক নগ্ন ক্ষপণক[১] বারংবার দৃশ্য ও বারংবার অদৃশ্য হইয়া আগমন করিতেছেন। তদনন্তর সেই দুই কুণ্ডল ভূতলে রাখিয়া শৌচ অচিমনাদি উদককার্য আরম্ভ করিলেন। এই অবসরে সেই ক্ষপণক সত্বর তথায় উপস্থিত হইয়। কুলদ্বয় গ্রহণ পূর্ব্বক পলায়ন করিল। উতঙ্ক উদককার্য্য সমাপন করিয়া শুচি ও সংযত হইয়া দেব গুরু প্রণাম পূর্ব্বক অতি বেগে তাহার পশ্চাৎ ধাবমান হইলেন। এবং তক্ষক অত্যন্ত সন্নিহিত হইলে তাহাকে গ্রহণ করিলেন। সে, গৃহীতমাত্র ক্ষপণকরূপ পরিত্যাগ করিয়া তক্ষকরূপ পরিগ্রহ পূর্বক পৃথিবীতে অকস্মাৎ আবির্ভূত সম্মুখবর্তী মহগর্তে প্রবিষ্ট হইল, এবং নাগলোকে প্রবেশ করিয়া স্বীয় আসে গমন করিল। উতঙ্ক পৌষপত্নীর বাক্য স্মরণ করিয়া তক্ষকের অনুসরণে প্রবৃত্ত হইলেন, এবং প্রবেশমার্গ নিরর্গল করিবার নিমিত্ত দণ্ডকাষ্ঠ দ্বারা সেই মহাগর্ত খনন করিতে লাগিলেন,


  1. কোনও গ্রন্থকার ক্ষপণকদিগকে বৌদ্ধ উদাসীন এবং কেহ কেহ জৈন উদাসীন বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন। কিন্তু আনন্দগিরিকৃত শঙ্করদিগ্বিজয়ে লিখিত আছে, তাহারা কালের উপাসনা করিত।