পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬
মহাভারত।

ধার্ম্মিক, বেদপারগ, তপস্বী, যশস্বী, শাস্ত্রজ্ঞ, ব্রহ্মজ্ঞ, সত্যবাদী, ও জিতেন্দ্রিয় ছিলেন।

 শৌনক কহিলেন, হে সূতপুত্র। মহাত্মা ভৃগুনন্দন চ্যবন নামে বিখ্যাত হইলেন কেন, তুমি তাহার সবিশেষ বর্ণন কর।

 উগ্রশ্রবাঃ কহিলেন, ভগবান্ ভৃগুর পুলোম নামে ভুবনবিখ্যাতা প্রেয়সী ধর্মপত্নী ছিলেন। তাঁহার সহযোগে পুলোমা গর্ভবতী হইলেন। এক দিবস, পরমধাম্মিক ভৃগু স্নানার্থ নিষ্ক্রান্ত হইলে, পুলোমা নামে এক রাক্ষস তদীয় আশ্রমে উপস্থিত হইল। সে আশ্রমপ্রবেশানন্তর পরমসুন্দরী ভৃগুপত্নীকে নয়নগোচর করিয়া কামাস্টি ও বিচেতন হইল। চাকদর্শনা পুলোমা তপোবনসুলভ ফল মূলাদি দ্বারা সেই অভ্যাগত রাক্ষসের যথোচিত অতিথিসৎকার করিলেন। রাক্ষস মন্মথশর প্রহারে। নিতান্ত কাতর হইয়া, এই কামিনীকে হরণ করিব, এই নিশ্চয় করিয়া অত্যন্ত হৃষ্টচিত্ত হইল। পুলোমা অগ্রে ঐ চারুহাসিনী কন্যাকে, মমেয়ং ভার্য্যা, বলিয়া বরণ করিয়াছিল, পশ্চাৎ তাঁহার পিতা তাঁহাকে শাস্ত্রবিধানানুসারে ভৃগুকে প্রদান করেন। এই অবমাননা অনুক্ষণ তাহার হৃদয়ে জাগরূক ছিল। এক্ষণে সে অবসর পাইয়া হরণ করিবার মানস করিল।

 রাক্ষস এই রূপে পুলোমাহরণে কৃতসঙ্কল্প হইয়া অগ্নিগৃহে প্রবেশ করিল, এবং প্রজ্জ্বলিত হুতাশনসন্নিধানে দণ্ডায়মান হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, হে পাবক! তুমি দেবতাদিগের মুখ, তোমাকে জিজ্ঞাসা করিতেছি, যথার্থ বল, এই কামিনী কাহার ভার্য্যা? আমি এই বরবর্ণিনীকে অগ্রে পত্নীত্বে বরণ করিয়াছিলাম, পরে ইহার পিতা অধর্ম্মকারী ভৃগুকে দান করেন। অতএব এই নির্জনবাসিনী নিতস্বিনী যদি ভৃগুর ভার্য্যা হয় বল, ইহাকে