পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পৌলোমপর্ব্ব
৮৭

আমি আশ্রম হইতে হরণ করিবার মানস করিয়াছি। ভৃগু যে, আমার পূর্ধবৃত। রূপবতী ভার্য্যাকে গ্রহণ করিয়াছে, সেই ক্রোধানল অদ্যপি আমার হৃদয় দাহ করিতেছে।

 দুরাত্মা রাক্ষস জলিত অগ্নিকে এইরূপ আমন্ত্রণ করিয়া, ভৃগুভার্যা বিষয়ে সন্দিহান হইয়া, বারংবার জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল, হৈ হুতাশন! তুমি সর্ব কাল সর্ব ভূতের অন্তরে পুণ্যপাপের সাক্ষিস্বরূপ অবস্থিত আছ; অতএব জিজ্ঞাসা করিতেছি, যথার্থ বল, পাপকারী ভৃগু আমার যে পূর্ববৃতা কন্যাকে অপহরণ করিয়াছিল, এই সেই কামিনী তামার ভার্য্যা কি না? তোমার নিকট ইহার তত্ত্বার্থ শ্রবণ করিয়া তোমার সমক্ষেই ভূগুভার্য্যাকে অশ্রম হইতে হরণ করিব।

 রাক্ষসের এইরূপ জিজ্ঞাসা শুনিয়া, অগ্নি তাতান্ত দুঃখিত হইলেন, এবং এক পক্ষে মিথ্য! কখন, পক্ষান্তরে ভৃগুশাপ, উভয় ভয়ে ভীত হইয়া অনুদ্ধত স্বরে কহিলেন, হে দানরনন্দন! তুমি পূর্বে ইহাকে বরণ করিয়াছিলে, যথার্থ বটে, কিন্তু তৎকালে তোমার মন্ত্র প্রয়োগ ও বিধি পূর্বক বরণ করা হয় নাই। ইহার পিতা সৎপাত্র লোভক্রান্ত হইয়া ভৃগুকে দান করিয়াছেন, তোমাকে দেন নাই। মহর্ষি ভৃগুও বেদদৃষ্ট বিধি ও পরম্পরাগত প্রণালী: অনুসারে আমাকে সাক্ষী করিয়া ইহার পাণিগ্রহণ করিয়াছেন। তথাপি তুমি পূর্বে বরণ করিয়াছিলে, এই নিমিত্ত ইনি তোমারই ভার্য্যা। আমি মিথ্যা কহিতে পারি না, লোকে কোন কালে মিথ্যার আদর নাই।