পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পৌলোমপর্ব্ব
৯১

পিতৃগণের মুখ। অমাবস্যাতে পিতৃগণকে ও পূর্ণিমাতে দেবতাদিগকে উদ্দেশ করিয়া লোকে আমার মুখে আস্থতি প্রদান করে, তাঁহারাও আমার মুখেই ভক্ষণ করেন।

 ইহা কহিয়া কিঞ্চিৎ চিন্তা করিয়া অগ্নি দ্বিজগণের অগ্নিহোত্র ও যন্ত্রক্রিয়া হইতে অন্তর্হিত হইলেন। অগ্নি অন্তর্ধান করাতে প্রজাগণ, ওঙ্কার, বষট্‌কার, স্বধা, স্বাহা শূন্য হইয়া, অত্যন্ত দুঃখিত হইল। তদ্দর্শনে ঋষিগণ উদ্বিগ্ন চিত্তে দেবতাদিগের নিকটে গিয়া নিবেদন করিলেন, হে দেবগণ। অগ্নির অন্তর্ধান বশতঃ অগ্নিহোত্রাদি ক্রিয়া লোপ হওয়াতে লোকয় কির্তব্যবিমূঢ় হইয়াছে; অতএব যাহা কর্তব্য হয়, বিধান করুন, কালাতিপাতের সময় নাই। অনন্তর ঋষিগণ ও দেবগণ ব্রহ্মার নিকটে গিয়া অগ্নির শাপ ও তন্নিবন্ধন ক্রিয়াললাপের বিষয় নিবেদন করিয়া কহিলেন, ভগবন্! ভৃগু কোনও কারণ বশতঃ অগ্নিকে শাপ দিয়াছেন, কিন্তু তিনি দেবতাদিগের মুখ ও যজ্ঞের অগ্রভাগডোক্ত হইয়া কি রূপে সর্বভ হইবেন? সর্বলোকপিতামহ ব্রহ্ম। তাঁহাদিগের নিবেদন শুনিয়া অগ্নিকে আম পূর্বক মনোহর বাক্যে সান্ত্বনা করিয়া কহিলেন, বৎস! তুমি সর্বলোকের কর্ত্তা ও সংহ; তুমি ত্রিলোক ধারণ করিয়া আছ; তুমি অগ্নিহোত্রাদি ক্রিয়াপ্রবর্তক; হে লোকনাথ! এক্ষণে যাহাতে ক্রিয়ালোপ না হয়, তাহা কর। তুমি ঈশ্বর হইয়া এমন বিমূঢ় হইতেছ কেন? তুমি সব লোকে সর্ব কাল পবিত্র; তুমি সর্ব ভূতের গতি। অতএব তুমি সর্ব শরীরে সর্বভুক্ষ হইবে না। তোমার অপান দেশে যে সকল শিখা আছে, তাহারাই সর্ব্ব বস্তু ভক্ষণ করিকে এবং তোমার মাংসভক্ষণী যে তনু আছে, সেই