( >>8 ) তাহাদের ভাগ্যে হলাহল উত্থিত হইল, বিবাহের অত্যন্ত্রকাল পরেই জামাতা রূপেশ্বর সেন ঐ অবোধ বালিকাকে অকুল দুঃখসাগরে নিক্ষেপ করিয়া কালের করাল গ্রাসে নিপতিত হইলেন । এই ঘটনায় সমস্ত রাজনগরে হুলস্থল পড়িয়া গেল এবং বালিকার আত্মীয়বর্গ শোকে মুহ্যমান হইলেন । অচিরে বালিকার মুকোমল দেহ হইতে সমস্ত আভরণ অপসারিত করা হইল এবং সুন্দর পরিচ্ছদের পরিবর্তে শুক্লবস্ত্রদ্বারা অভয়ার রমণীয় দেহ আবৃত করা হইল। পিতার অতুল ঐশ্বৰ্য্য সত্ত্বেও এই অবোধ বালিকা সমস্ত মুখবাঞ্ছা বিসর্জন পূৰ্ব্বক অকালে ব্রহ্মচারিণীর বেশ ধারণ করিয়া একাহারে জীবন যাপন করিতে লাগিল । অভয়ার এই শোচনীয় পরিণাম রাজবল্লভের বক্ষে শেলের ন্যায় বিদ্ধ হইয়াছিল। অপ্রতিহত ক্ষমতা ও অতুল রাজ-সম্পদ তাহার নিকট অকিঞ্চিৎকর বোধ হইতে লাগিল। শোকের প্রথম উচ্ছাস অপগত হইলে তিনি মনে মনে চিন্তা করিলেন, তনয়ার এই অভাবনীয় পরিণাম কদাচ মঙ্গলময় জগদীশ্বরের অভিপ্রেত হইতে পারে না ; অতএব হিন্দু শাস্ত্র সমুদ্ৰ-মন্থন করিয়া ইহার প্রতিবিধানের চেষ্টা করা কৰ্ত্তব্য। এই সময় কৃষ্ণদাস বেদান্তবাগীশ, নীলকণ্ঠ সাৰ্ব্বভৌম এবং কৃষ্ণদেব বিদ্যাবাগীশ রাজবল্লভের দ্বার-পণ্ডিতরূপে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি অচিরে ঐ পণ্ডিতগণকে আহবান করিয়া বিধবাবিবাহের বৈধতা সম্বন্ধে অনুসন্ধান করিতে বলিলেন। তাহারা শাস্ত্রানুশীলন এবং পরস্পর আলোচনাম্বারা সিদ্ধান্ত করিলেন যে-হিন্দুশাস্ত্রানুসারে অক্ষত যোনি বিধবাগণের পুনৰ্ব্বিবাহ হইতে কোন আপত্তি নাই। যে বিধবাবিবাহ বহুকাল হইতে হিন্দুসমাজে অপ্রচলিত, মাত্র তিনজন পণ্ডিতের মতের উপর নির্ভর করিয়া তাহার পুনঃ প্রচলন কাৰ্য্যে হস্তক্ষেপ করা কাহারও সাধ্যায়ত্ত ছিল না। সুতরাং এই বিষয়ে মতামত সংগ্ৰহ
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/১২১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।