( २२२ ) এবং প্রভাত সময়ে ঐ উভয় কাষ্ঠখণ্ডদ্বারা আহবনীয় অগ্নি উৎপাদন করিতেন। আহবনীয় অগ্নি উৎপন্ন হইলে অধ্বষু কর্তৃক গার্হপত অগ্নি নিৰ্ব্বাপিত হইত। এই সময় কোন দেবালয় কিংবা দেবতা-মূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠিত ছিল না। প্রত্যেক গৃহী স্ব স্ব গৃহস্থিত বেদিকার পাশ্বে উপবেশনপূৰ্ব্বক পবিত্র বেদমন্ত্রেীচ্চারণে অভীষ্ট দেবতার আরাধনা করিতেন (১)। কালক্রমে আর্য্যসমাজ ধনে জনে উন্নতি লাভ করিলে তাহাদের অমুষ্ঠের যজ্ঞকাৰ্য্য বহুব্যয়সাধ্য ও আড়ম্বরপূর্ণ হইয়া উঠিল। এই সময়ে প্রত্যেক যজ্ঞকাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহের নিমিত্ত হোতৃগণ, অধ্যযুগীগণ, উদগাতৃগণ এবং ব্রহ্মগণ এই চারি শ্রেণীস্থ ঋত্বিকৃ নিযুক্ত হইতেন। অধ্বযু্যগণ পরিমাণ করিয়া যজ্ঞবেদিক ও যজ্ঞীয় পাত্র প্রস্তুত করিতেন, যজ্ঞকার্যে যে কাষ্ঠ ও বারিন প্রয়োজন হইত, তাহা তাহারা সংগ্ৰহ করিয়া দিতেন এবং পশু-হনন-ক্রিয় ঐ অধ্বর্য কর্তৃকই সম্পাদিত হইত। উদগাতৃগ স্বর-সংযোগে সুমধুর সাম গান করিতেন এবং হোতৃগণ ঋঙ মন্ত্রউচ্চারণ পূৰ্ব্বক যজ্ঞকার্য্যে সহায়তা করিতেন। ব্রহ্মগণ-নামক ঋত্বিক শ্রেণীর কোন বিশেষ কাৰ্য্য নির্দিষ্ট ছিল না ; তাহারা সমগ্ৰ যজ্ঞ কার্য্যের অধ্যক্ষতা করিতেন এবং অপর শ্রেণীস্থ ঋত্বিকের কোন বিষয়ে সন্দেহ উপস্থিত হইলে তাহারা ঐ সন্দেহ ভঞ্জন করিয়া দিতেন। প্রত্যেক শ্রেণীতে চারিজন করিয়া ঋত্বিক নিযুক্ত হইত। হোতৃগণে যে চারি জনের প্রয়োজন হইত, তাহদের নাম হোতা, প্রশাস্তা, আচ্ছাবক ও গ্রাবস্রোত ; অধ্বযুগিণে যে চারি-জনের প্রয়োজন হইত তাহাদের নাম অধ্বযু্য, প্রতিপ্রস্থাত, নেষ্ট ও উল্পেতা, ব্রহ্মগণে যে চারি জনের (১) শ্ৰীযুক্ত বাবু রমেশচন্দ্র দত্ত, সি, আই, ই, প্রণীত ইংরেজী ভাষায় লিখি “ভারতবর্ষের প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস” নাম গ্রন্থ অবলম্বনে লিখিত।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/১২৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।