( २७० ) ১৬৯৭ খৃষ্টাব্দে সম্রাট-পুত্ৰ আজিম ওশান বাঙ্গালার মুবাদারী পদ লাভ করেন। এই সময় ইংরেজ কোম্পানি প্রচুর উপঢৌকন প্রদান করিয়া তাহার নিকট হইতে সুতানুটী, কলিকাতা ও গোবিন্দপুর প্রভৃতি হুগলী নদীর পূৰ্ব্বতীরস্থ তিন মাইল ভূমি ক্রয় করিবার অধিকার প্রাপ্ত হইলেন। যে কলিকাতা ইতিপূৰ্ব্বে বনজঙ্গলে পরিপূর্ণ ও হিংস্র জন্তুর আবাসস্থল ছিল, তাহা ইংরেজের হস্তগত হইয়া অপূৰ্ব্ব শ্ৰী ধারণ করিল। বহুসংখ্যক শ্রমজীবী নবাবের অধিকার ত্যাগ করিয়া কলিকাতায় বাসস্থল নিৰ্ম্মাণ করিল এবং হিংস্র জন্তুর পরিবর্তে ঐ স্থল লোকে পরিপূর্ণ হইল। কলিকাতার এই দ্রুত উন্নতি লক্ষ্য করিয়া হুগলীর ফৌজদার সাতিশয় শঙ্কিত হইলেন এবং লোক-প্রবাহ রুদ্ধ করিবার উদ্দেশ্রে কলিকাতার অধ্যক্ষের নিকট লিখিয়া পাঠাইলেন যে, নবাবের কলিকাতা-প্রবাসী প্রজাগণের বিচারকার্য্য নিৰ্ব্বাহের নিমিত্ত অবিলম্বে তথায় জনৈক কাজি প্রেরিত হইবে । কলিকাতার অধ্যক্ষ ইহাতে প্রমাদ গণিলেন এবং প্রচুর উপঢৌকনসহ পুনরায় আজিম ওশানের শরণাপন্ন হইলেন । আজিম ওশান ইংরেজ কোম্পানির পক্ষাবলম্বন করিলেন ; সুতরাং হুগলীর ফৌজদারের অভিপ্রায় কার্যে পরিণত হইল না। এই সময় কলিকাতা, ঢাকা, কাশিমবাজার, হুগলি, বালেশ্বর প্রভৃতি স্থলে ইংরেজদিগের বাণিজ্যকুঠি সংস্থাপিত ছিল । ১৭০৭ খ্ৰীষ্টাব্দে কলিকাতার দুর্গে প্রায় তিনশত সৈন্ত বাস করিত। এক্ষণে এই কুঠী প্রেসিডেন্সির আসনে উন্নীত এবং বাঙ্গালাদেশের সমস্ত কুঠী কলিকাতাস্থ কুঠার শাসনাধীন হইল । এপর্য্যন্ত মান্দ্রাজ প্রদেশীয় সৰ্ব্বপ্রধান, কুঠার কর্তৃত্বে যে বাঙ্গাল দেশীয় কুঠা-সমূহের কার্য নিৰ্ব্বাহ হইতেছিল তাহ রহিত হইল ।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/১৬৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।