( २७१ ) কৃষ্ণদাস ঢাকা হইতে কলিকাতা প্রস্থান করিয়াছিলেন ; সুতরাং তাহারা ব্যর্থ মনোরথ হইয়া মুরশিদাবাদে প্রত্যাবর্তন করিল। ঐ সময় আলিবর্দী জীবিত ছিলেন। সিরাজ তাহার নিকট গমন করিয়া বলিলেন ইংরেজ বণিক ঘেসেটি বিবীর পক্ষাবলম্বন করিয়াছে, অতএব কলিকাতায় সৈন্ত প্রেরণ পূৰ্ব্বক ধনরত্ব সহ কৃষ্ণদাসকে ধৃত করিয়া আনয়ন করা কৰ্ত্তব্য। নবাব সিরাজকে প্রবোধ দিয়া বলিলেন, রোগ মুক্ত হইলে আমি স্বয়ংই এ বিষয়ের উপযুক্ত প্রতিবিধান করিব, এক্ষণে তোমার এ কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিবার প্রয়োজন নাই (১)। আলিবন্দী উদরী রোগে আক্রান্ত হইয়া শয্যাগত হইয়াছিলেন। তৎকালে র্তাহার বয়ঃক্রম অশিতিবর্ষ। প্রবীণ বয়সে এই রোগ তাহার কালস্বরূপ হইয়া দাড়াইল, চিকিৎসকগণের অবিরাম চেষ্টায়ও কোনরূপ মুফল প্রসব করিল না। ১৭৫৬ খৃষ্টাব্দের ৯ই এপ্রিল তারিখে বর্ষীয়ান নবাব সংসারের সমস্ত শৃঙ্খল ছিন্ন করিয়া নিত্যধামে চলিয়া গেলেন। যদিও অন্নদাতা প্রভু-পুত্রের জীবন সংহার করিয়া, আলিবর্দী পাশববলে বাঙ্গালার সিংহাসন অধিকার করিয়াছিলেন, যদিও কৃতঘ্নত ও রাজদ্রোহ-পাপে তাহার হস্ত কলঙ্কিত হইয়াছিল, যদিও শক্র দমন সময় ঘেসেটিবিবী সিরাজের প্রতিদ্বন্দ্বী এবং কুষ্ণদাস ঘেসেটি বিীৰু কৰ্ম্মচারী ছিলেন ; এ অবস্থায় সিরাজের নিকট কোন নিকাস কিংবা রাজস্ব প্রদান করিতে কৃষ্ণদাসের কোনরূপ দায়িত্বই ছিল না। অৰ্ম্মি-কৃত ইতিহাসে লিখিত আছে যে, সিরাজ কৃষ্ণদাসের কলিকাতায় পলায়ন-বাৰ্ত্ত। শ্রবণ করিয়৷ আলিবদীর নিকট বলিয়াছিলেন যে, ইংরেজগণ ঘেসেটি বিবীর পক্ষ অবলম্বন করিয়াছে। এতদ্বারা সিদ্ধান্ত হইতেছে যে3রাজবল্লভ যাহাতে ঘেসেটি বিবীর পক্ষ সমর্থন করিতে ন পারেন তাহাই সিরাজের উদেষ্ঠ ছিল, নতুবা এ স্থলে ঘেসেটিবিধার নামোল্লেথ হওয়ার কোন কারণ ছিল না। এখন পাঠকগণ বিচার করিয়া বলুন, রাজবল্লভ ও কৃষ্ণদাসই দুৰ্ব্বত্ত কি যিনি তাহাদিগকে অষ্ঠায়রুপে আক্রমণ করিয়া “বিশ্বাস ঘাতক” “নরাধম” প্রভৃতি শিষ্টাচারবিরুদ্ধ বাক্যপ্রয়োগ করিয়াছেন, তাহার আচরণই সাধুজন বিগর্হিত। . (») Ormos Indoostan, vol. II. Page 49 to 5o•
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/১৭৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।