( ה של ) সিরাজ-জননী আমনা বেগম যে অন্তঃপুরে অবস্থান করিতেন, তথায় এই বিপ্লবের কোন সংবাদই উপস্থিত হয় নাই। হস্তী ঐ অন্তঃপুরের দ্বারদেশে সমাগত হইলে নাগরিকগণ সাতিশয় কোলাহল আরম্ভ করিল। সিরাজ-জননী এই সময় সহচরীবর্গে পরিবেষ্টিতা হইয়া নানাবিধ ক্রীড়া কৌতুকে লিপ্ত ছিলেন। তিনি এই কোলাহলের কারণ জিজ্ঞামু হইয়া জ্ঞাত্ত হইলেন যে, তাহারই সৰ্ব্বনাশ সাধিত হইয়াছে। এই নিদারুণ সংবাদ কর্ণকুহরে প্রবেশ করিবামাত্র তাহার মনের যে কি অবস্থা হইল তাহ বর্ণনা করা সাধ্যায়ত্ত নহে। উন্মাদিনী জননী পুত্ৰশোকে আত্মহারা হইয়া নগ্নপদে, ও অনাবৃত মস্তকে রাজপথে উপস্থিত হইলেন এবং হস্তীর পাশ্বে আগমন করিয়া মৃতপুত্রের দেহধারণ করতঃ উচ্চৈঃস্বরে বিলাপ করিতে লাগিলেন। র্তাহার করুণ রোদনে জনস্রোত আকুলিত হইয়া উঠিল এবং সকলের নয়নপ্রান্ত হইতে অশ্রুধার প্রবাহিত হইতে লাগিল। পুত্ৰশোকাতুরা জননীর ঐ জনস্রোতের প্রতি অনুমাত্রও লক্ষ্য ছিল না, তিনি বিবশ s হতচেতনা হইয়া অনবরত আৰ্ত্তনাদে চতুর্দিক নিনাদিত করিতে লাগিলেন । খাদেম হাসন থ’ নামক মীরজাফরের ভগিনীর সপত্নী-পুত্র ঐ স্থলের নিকট অবস্থান করিত। জুরাত্মা স্বীয় প্রাসাদ হইতে এই দৃশু অবলোকন করিয়া সাতিশয় আমোদ উপভোগ করিতেছিল। সিরাজজননীর আর্তনাদে জনতা ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। প্রথমতঃ সকলেই সমদুঃখী হইয়া অশ্রুবর্ষণ করিল, ক্রমে তাহাদের রোষ বৰ্দ্ধিত হইলে তাহারা উত্তেজিত স্বরে মীরণকে অভিসম্পাত করিতে লাগিল । খাদেম হাসন মনে করিল এই জনতা অধিকতর উত্তেজিত হইলেই মীরণের প্রাসাদ আক্রমণ করিবে । সুতরাং ঐ পাষণ্ড বহুসংখ্যক চোপদারসহ ঐ স্থলে গমন করিল এবং সিরাজ-জননী ও তাহার
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/১৯৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।