( ર9ના ) সম্বন্ধে বাদানুবাদ করিয়া রাজবল্লভের বিচারপ্রার্থী হন, এবং তাহার নির্দেশমতে তাহা দরিদ্র ব্রাহ্মণের প্রাপ্য বলিয়াই নিৰ্দ্ধারিত হয় । অতঃপর তিনি প্রতিবর্ষেই স্বর্ণ-নিৰ্ম্মিত থোড় দান করিতেন। অদ্যাপি ঐ ব্রাহ্মণের উত্তরপুরুষগণ বর্তমান আছেন এবং তাহারা “আঠিয়া” (১) ব্রাহ্মণ নামে অভিহিত হইতেছেন । গুরুবংশীয় কোন বালিকার বিবাহের বায়ভার রাজবল্লভ স্বয়ং গ্রহণ করিয়াছিলেন। ঐ বিবাহ উপলক্ষে দেশীয় সমস্ত ঘটক নিমন্ত্রিত হইয়াছিলেন। রাজা কৃষ্ণদাস ঘটক বিদায়ের ভারপ্রাপ্ত হইয়া, কি হারে সহচার করিতে হইবে তাহ পাশ্ববর্তী প্রাচীন লোকদিগকে জিজ্ঞাসা করেন। সহচার বলিতে ব্রাহ্মণ বা ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের বিদায়ের হার বুঝায়। যিনি সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক উপযুক্ত, তিনি পূর্ণ সহচার, এবং অবশিষ্ট ব্যক্তিগণ স্ব স্ব গুণানুসারে পূর্ণসহচারের অংশমাত্র পাইয়৷ থাকেন । র্যাহাদিগকে সহচারের বিষয় জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল, তাহার ঘোল টাকা হারে সহচার করিতে বলিলে, কৃষ্ণদাস সেই ষোল টাকাই সহচার করিয়া, উহার ত্রিগুণ হারে বিদায় প্রদান করেন। তদবধি বিক্রমপুর সমাজে ঘটক বিদায় উপলক্ষে সহচারের ত্রিগুণ পরিমাণ টাকা দেওয়ার প্রথা প্রবর্তিত হইয়াছে। রাজবল্লভের দানশীলতা সম্বন্ধে যে সমস্ত কিংবদন্তী প্রচলিত আছে তন্মধ্যে একটি কিংবদন্তী এই যে, একদা কোন ব্রাহ্মণ স্বীয় দুরবস্থা জানাইয়া তাহার নিকট এক দিবসের আয় ভিক্ষা প্রার্থনা করেন। তিনি ঐ ব্রাহ্মণকে সন্ধ্যার সময় পুনরায় আসিতে বলিয়া বিদায় প্রদান করেন। দিবসের অধিকাংশ সময় অতীত হইলেও কোন অর্থের সমাগম হইল না দেখিয়া তিনি সাতিশয় চিন্তিত হইলেন ; অবুশেষে প্রদোষের অব্যবহিত (১) পুৰ্ব্ববঙ্গে আঠিয়া, থোড়ের প্রতিশব্দরূপে ব্যবহৃত হইয় থাকে।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/২৫৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।