( २८० ) জানকীবল্লভ রায় মহাশয় বাখরগঞ্জের অন্তর্গত কলসকাঠী গ্রাম নিবাসী জমিদার বংশের আদিপুরুষ। জনশ্রুতি এই যে, জানকীবল্লভের সহোদরগণ র্তাহার প্রাণ-বিনাশের উদ্যোগ করিলে, তিনি জ্যেষ্ঠ সহোদর-পত্নীর সাহায্যে পলায়ন করিয়৷ ছদ্মবেশে রাজবল্লভের আলয়ে উপস্থিত হন। তথায় তিনি কতিপয় দিবস ঐরূপে অবস্থান করিয়া অবশেষে রাজবল্লভের নিকট আত্মপরিচয় প্রদান করিলে, রাজবল্লভ দয়াপরবশ হইয়া তাহার হৃতসম্পত্তির উদ্ধার সাধন করেন, এবং সবিশেষ চেষ্টা করিয়া নবাব সরকার হইতে র্তাহাকে অরঙ্গপুর পরগণার জমিদারী এবং এখনও প্রাচীন সম্প্রদায়ের মুখে জ্ঞাত হইতেছেন যে, কীৰ্ত্তিনারায়ণের পিত। কংশ নারায়ণ বস্ব ইদিলপুর হইতে বিক্রমপুরের অন্তর্গত "রায়েসবর” গ্রামে গৃহ প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। কংশ নারায়ণের অবস্থ। অতি শোচনীয় ছিল । কীৰ্ত্তিনারায়ণের বাল্যকালে একদা তদীয় জননী তাহাকে অর্থাভাবের নিমিত্ত কঠোর বাক্য প্রয়োগ করেন, কীৰ্ত্তিনারায়ণ এই ঘটনায় অপমান বোধ করিয়া, জনক জননীর অজ্ঞাতে গৃহ পরিত্যাগপূর্বক রাজনগরে উপস্থিত হন, এবং রাজবল্লভেরনিকট অশ্রুসিক্ত লোচনে আত্ম-দুঃখকাহিনী বর্ণনা করেন। রাজবল্লভ দয়ার্ড হইয়। ঐ বালককে স্বীয় জমিদারীর কাৰ্য্যে নিযুক্ত করেন, এবং কীৰ্ত্তিনারায়ণের যোগ্যতার মুগ্ধ হইয়া উহাকে ঢাকার নবাব সরকারে কার্য্য প্রদান করেন, প্রতিভাসম্পন্ন যুবক অবশেষে উচ্চ রাজকাৰ্য্য লাভ করিয়াছিল।” রাজবল্লভের উত্তর পুরুষ, শ্ৰীযুক্ত বাবু প্রতাপচন্দ্র সেন মহাশয়ের নিকট যে হস্ত লিখিত পুস্তক প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে, তদ্বারাও রাজমোহন বাবু ও শ্যামকান্ত বাবুর উক্তি সমর্থিত হইতেছে। কীৰ্ত্তিনারায়ণ লাল অপেক্ষ। উচ্চ উপাধি লাভ করিতে সক্ষম হন নাই। যাহার নবাবী আমলে শাসনকর্তৃপদে নিযুক্ত হইতেন, তাহার রায়, রাজ, এবং মহারাজ উপাধিতেই ভূষিত হইতেন। সে সময় র্যাহারা আমল শ্রেণীস্থ কৰ্ম্মচারী ছিলেন, তাহার। “লাল৷” ৰলিয়া অভিহিত হইতেন। কীৰ্ত্তিনারায়ণ যে কোন প্রদেশের শাসন কাৰ্য্য, নিৰ্ব্বাহ করিয়াছেন তাহ। ইতিহাস পাঠে জানা যায় না। এতদ্বারা কালীনাথ বাবুর উক্তির খণ্ডন হইতেছে সন্দেহ নাই ।
পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/২৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।